সাতক্ষীরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয়ে প্রতারক চক্র


আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয়ে প্রতারক চক্র
  • Font increase
  • Font Decrease

কালিগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয়ে এক মিষ্টান্ন বিক্রেতার নিকট হতে ৪০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। ঘটনাটি প্রতারক চক্রের অপকৌশল সেটি নিশ্চিত হয়ে থানায় জিডি করেন ওই ব্যবসায়ী। অপরদিকে ইউএনও পরিচয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবির বিষয়টি জানার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্কতামূলক পোস্ট দিয়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের পীরগাজন গ্রামের ইমাম আলী সরদারের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৮) এর কদমতলা বাজারে ‘নাফিজ মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামে একটি দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মে) বেলা ১২টার দিকে রতনপুর ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুম বিল্লাহ সুজন (৩৫) ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের নিকট যেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কথা বলবে বলে মোবাইল ফোনটি তার কাছে দেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দিয়ে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি জানতে চাওয়া হয়। পরবর্তীতে ওই ব্যবসায়ীর ব্যবহৃত ০১৯৩৭২৭৯৫৩৫ নম্বরে বেলা ১২ টা ২০ মিনিটে ০১৬১০৯০১৫৭৬ নম্বর থেকে ইউএনও পরিচয়ে ফোন করে বলেন, "বর্তমানে করোনাকালীন সময় সকল দোকানপাট বন্ধ কিন্তু আপনার মিষ্টির দোকানের উপর অনেক চাপ আছে, সে ক্ষেত্রে আমরা অপারেশনে আসলে আপনাকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করবো। আপনি যদি জরিমানা খেতে না চান তাহলে আমার এই নম্বরে ৪০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন।" এরপর ০১৬১০৪৭৩৩২০ নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হয়। ঘটনাটি প্রতারক চক্রের অপকৌশল সেটি নিশ্চিত হয়ে কালিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন ওই ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম।

এদিকে ইউএনও পরিচয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবির বিষয়টি অবগত হওয়ার পর "ইউএনও কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা ইউএনও" ফেসবুক আইডি থেকে সতর্কবাণী প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নামে ০১৭৫৪৭৩৬৫৭১ নাম্বর থেকে ফোন করে বা অন্য কোন নম্বর থেকে ফোন করে মোবাইল কোর্ট করা হবে, এ জাতীয় কথা বলে হয়রানি করছে মর্মে শোনা গেছে। এ বিষয়ে কোন রকম আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কারো কথায় আতঙ্কিত হয়ে কোনো বিকাশ নম্বরে বা সরাসরিভাবে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না। এসকল প্রতারককে কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ সহযোগিতা করছে বলেও শোনা গেছে। তাদের অবগত করার জন্য জানাচ্ছি যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কখনোই কোনো নাম্বার থেকে ফোন করে বা কথা বলে কোন প্রকার দোকানদার বা অন্য কারো কাছে কোন রকম টাকা পয়সা দাবি করবে না। দোকানদার বা অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার ব্যাপারে কোন জনপ্রতিনিধি বা গ্রামপুলিশ সহযোগিতা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিশেষ উল্লেখ্য যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কোন বিকাশ নাম্বার নেই। প্রতারিত হওয়ার পূর্বে ০১৭৫৪৭৩৬৫৭১ নম্বরে ফিরতি কল করে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে, বিকাশ নম্বর হ্যাক করে গ্রাহকদের একাউন্টে টাকা উত্তোলন করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী গ্রাহক থানায় জিডি করেছেন। প্রতারক চক্রের এমন বেপরোয়া কর্মকান্ডে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এদের চিহিৃত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।