মেয়রকে সন্ত্রাসী বললো প্রশাসন, আওয়ামী লীগের অভিযোগ হয়রানি


প্রকৌশল নিউজ :
মেয়রকে সন্ত্রাসী বললো প্রশাসন, আওয়ামী লীগের অভিযোগ হয়রানি
  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের বাসভবনে দফায় দফায় হামলা ঘটনায় মামলা দায়েরের পর নগরীতে এখন শুনশান নীরবতা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রয়েছে। দুই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে চলছে অভিযান। তবে এ অভিযানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। সেইসঙ্গে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে অটল তারা। এদিকে, বরিশালের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকায় বিজিবি’র প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।

গত ১৮ আগস্ট রাতে ব্যানার নামানোকে কেন্দ্র করে ইউএনও’র বাসভবনে হামলা এবং পুলিশের সাথে মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৪০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলার বাদী হয়েছেন ইউএনও মুনিবুর রহমান এবং অপরটি কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই শাহ জালাল মল্লিক।

দুই মামলায় প্রধান আসামি সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহসহ নামধারী ৮৫ এবং অজ্ঞাতনামা প্রায় সাড়ে ৪শ’ জন। নামধারীদের মধ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ৫ জনসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আফজালুল করিম অভিযোগ করে বলেন, মামলার অজুহাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ যেভাবে কাজ করছে তাতে করে তাদের ওপর আস্থা রাখা যাচ্ছে না। এ কারণে ১৮ আগস্ট রাতে যে ঘটনা ঘটেছে তার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান এ সিনিয়র নেতা ও সাবেক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি।

তিনি এ ধরনের অভিযান থেকে পুলিশকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। আফজাল আরো বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে। তিনি এই বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানান।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হয়রানির বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার আল আশরাফ ভুঁইয়া বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে যাকে প্রয়োজন তাকেই গ্রেপ্তার করা হবে। তবে নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন এ কর্মকর্তা।

বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল জানান, বর্তমানে বরিশাল নগরীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ কারণে বিজিবি মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই। সেই ধরনের পরিস্থিতি হলে বিজিবি মোতায়েন করা হবে। দুটি মামলা তদন্তে পুলিশের ওপর সম্পূর্ণ আস্থা থাকায় আর কোনো তদন্তের প্রয়োজন নেই। এদিকে ১৮ আগস্ট রাত থেকে সদর উপজেলা পরিষদসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য, রাতের বেলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা অবৈধ ব্যনার উচ্ছেদ করতে সদর উপজেলা পরিষদের চত্বরে যায়। সেখান থেকে বাধা পেয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ইউএনও’র বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় ইউএনওকে রক্ষায় নিরাপত্তাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করে। পরে পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও লাঠিলার্জ করলে ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আহত হয়। এরই জের ধরে ঘটে পরবর্তী ঘটনা।

প্রকৌশল নিউজ/প্রতিনিধি/এমআরএস