পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ : ছাত্রদলের দুই নেতা রিমান্ডে
রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক মো. সুজানুর রহমান এ দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট নিহার হোসেন ফারুকসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের জন্য আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘ঘটনাটি গত ১৭ আগস্টের। যেকোনো দলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলে, নেতার আদর্শে আদর্শিত হলে মাজারে ফুল দিতে যায়। তারা সেখানে পুলিশের অনুমতি নিয়েই গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ গায়ের জোরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। একসঙ্গে এত লোক দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে সেদিন হামলা চালানো হয়। রুমী এজাহার নামীয় আসামি হলেও জুয়েলের নাম এজাহারে নেই। তাদের ঘটনাস্থল থেকে ধরা হয়নি। তাছাড়া, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগও নেই। তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন প্রার্থনা করছি।’
শুনানি শেষে আদালত দুই আসামির দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
পুলিশ জানায়, চন্দ্রিমা উদ্যানের আশপাশে ভাঙচুরের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরের সময়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। সেই ছবির সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে গত ২৩ আগস্ট রাতে জুয়েল ও রুমীকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে জিয়ার মাজারে যাওয়া নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দলটির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়লে পুলিশও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তবে, বিএনপির অভিযোগ, শুধু টিয়ারশেল নয়, গুলিও চালিয়েছে পুলিশ। পরে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের গাড়িসহ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেন। ওই ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পের অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশও এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ আগস্ট সকাল ১১টায় চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যাওয়া নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তবে বিএনপির অভিযোগ, শুধু টিয়ারশেল নয়, গুলিও চালিয়েছে পুলিশ।
পরে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের গাড়িসহ যন্ত্রপাতি ভাংচুর করেন। এ ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পের অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ এবং গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানায় মঙ্গলবার রাতে এসব মামলা করা হয়।
থানার ওসি জানে আলম মুন্সী বলেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দুটি এবং পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের করা মামলায় বলা হয়েছে, তাদের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে তাদের ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আর সরকারি কাজে বাধা, মারধরের অভিযোগে পুলিশের পক্ষ অন্য মামলাটি করা হয়েছে।
এর মধ্যে পুলিশের করা মামলায় বিএনপির ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ ১৫৫ জনকে এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের মামলায় অজ্ঞাতসংখ্যক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে ওসি জানে আলম মুন্সী বলেন, আমরা এরইমধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস