বাঁশ শিল্পের দুর্দিন, অভাবে কারিগররা
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাঁশ কুটির শিল্পের অবস্থা অনেকটাই মন্দা, ফলে কাটছে না বাঁশ শিল্পের দুর্দিন। হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি শিল্প। পুঁজির অভাবে এ শিল্পের কর্মরতদের মাঝে নেমে এসেছে অন্ধকার।
সরেজমিন উপজেলার বাঁশ শিল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিছু দিন আগে এলাকাগুলোতে এই শিল্পের চাহিদা ছিল অনেক। বর্তমানে এসব পণ্যের বাজারে চাহিদা কিছুটা কম থাকায় এ শিল্পের কারিগরদের সংসারে অনেকটাই দুর্দিন নেমে এসেছে। তারপরও হাল ছাড়েনি এই শিল্প করিগররা।
উপজেলার চতরা মৌলি পাড়ায় ২৬টি পরিবার, গুর্জিপাড়ায় ৫টি পরিবার এবং চৈত্রকোল মৌলি পাড়ায় ১৭টি পরিবার বাঁশের তৈরি কুটির শিল্প কাজ করে থাকে। বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় পুঁজির অভাবে ধীরগতিতে চলছে এ শিল্পের কাজ।
চতরা মৌলি পাড়ার দানিয়াল হ্যামরম বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকে এ শিল্পের কাজ করে আসছি। যত কষ্ট হোক হাল ছাড়বো না। বিশ্বাস আছে সরকার আমাদের এই শিল্পের প্রতি একদিন নজর দেবে এ অপেক্ষায় আছি। উপজেলার তিনটি স্থানে নারী পুরুষ মিলে তাদের নিপুণ হাতে কাজ করেন। ডালি, কুলা, হাঁস মুরগির খাচা, ঢাকনা, চালন, খচা, ধামা ও ডালাসহ অনেক রকমের জিনিসপত্র বানিয়ে থাকেন।
চৈত্রকোল মৌলি পাড়ার রাজেন বলেন, বাপ-দাদা এই শিল্পের কাজ করেছেন, একটু অভাব হলেও পরিবারের লোকজন নিয়ে এই শিল্পের ওপর নির্ভর। এক সময় হাট বাজারগুলোতে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা ছিল অনেকটাই। বর্তমানে চাহিদা থাকলেও প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের কারণে এ শিল্প চাহিদা কিছুটা কমেছে। তারপরও থেমে নেই এ শিল্প। একই পাড়ার মানুয়েল মার্ডি বলেন, এ শিল্পের তৈরি জিনিসপত্র সব সময়ই চাহিদা রয়েছে। বাঁশের দাম বেশি থাকায় অনেকটাই লোকসান হচ্ছে। এছাড়া করোনাকালে হাট বাজার বন্ধ হওয়ায় পুঁজি বসে গেছে।
ফলে আমাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে। তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে আমাদের সুযোগ-সুবিধা দিলে হয়তো আমার আগের মতো ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারবো এবং গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাঁশের তৈরি কুটির শিল্পের নতুন নতুন পণ্য বাজারে আমদানি করবো।