মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি বারভিডার


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি বারভিডার
  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স এন্ড ডিলার্স এসোসিয়েশন (বারভিডা) প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে নসিমন, লেগুনা ইত্যাদি অনিরাপদ যান চলাচল নিরুৎসাহিত করে গণপরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাসকে স্বীকৃতি দেওয়ায় বারভিডা অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। তবে বাজেটে কেবল ৭ থেকে ৯ আসনের মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে। গণপরিবহন হিসেবে বহুল ব্যবহৃত ১০-১৫ আসন সেগমেন্টের মাইক্রোবাস যা নগর ও গ্রামীণ জীবনে বিশেষ প্রভাব রাখছে তা আমদানির ক্ষেত্রেও সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের জন্য বারভিডার আবেদনটি গৃহীত না হওয়ায় তা পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে পুনরায় দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার বারভিডা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এই আহ্বান জানান। এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল হক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ইলেকট্রিক্যাল অটোরিকশা ও কার রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। যা সরকারের রাজস্ব আহরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে দেশে অটোরিকশা ১০ লাখেরও বেশি রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকার বাজেটে দেশে বহুল ব্যবহৃত ১০-১৫ আসনের মাইক্রোবাস শুল্ক কমানোর তালিকা থেকে বাদ পরেছে। এটা মনে হয় ভুলবসত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এই মাইক্রোবাসটিতে তালিকা ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

লেখিত বক্তব্যে বারভিডা সেক্রেটারি জেনারেল বলেন যে, রিকন্ডিশন্ড মোটরযান আমদানির ক্ষেত্রে তারা যে ৪৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা এবং বছরভিত্তিক অবচয় সুবিধা চেয়েছিলেন তা প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভূক্ত না হওয়ায় সুবিধাটি প্রদানের জন্য তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন।

প্রস্তাবিত বাজেটের সঠিক বাস্তবায়নে বর্তমান মহামারি পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে বিনিয়োগ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং কাঙ্খিত রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল পদক্ষেপ গ্রহণ বিশেষ জরুরি বলে বারভিডা জানিয়েছে। পাশাপাশি বাজেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষতা এবং যথাযথ মনিটরিংয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে বারভিডা মত প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা নেতারা জানান, উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশে গ্র্যাজুয়েশনের এই তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন। দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাস্তবায়নে গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ প্রয়োজন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি’র (জাইকা) মতে গাড়ির অভ্যন্তরীণ বাজার ১ লক্ষ ইউনিট হলেই দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা যুক্তিযুক্ত হবে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এলে বাজার সম্প্রসারণের সাথে সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

বারভিডা নেতারা বলেন, নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কায়ন মূল্যে চরম বৈষম্যের ফলে নতুন গাড়ির চেয়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কোন কোন ক্ষেত্রে বেশি পরে যাচ্ছে। ফলে ক্রেতা কমে যাচ্ছে। আমদানি হ্রাস পাচ্ছে এবং এ খাতের ব্যবসায়ীবৃন্দ মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ছেন। আমদানি ক্রমাগত কমতে থাকায় যেখানে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২০ হাজার ১৪৯ এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ২৩ হাজার ৭৫ গাড়ি আমদানি হয় সেখানে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে আমদানি কমে ১২ হাজার ৫০২ টিতে নেমে আসে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরেও আমদানি হ্রাসের ধারা অব্যহত রয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ও লক্ষ্যনীয় হারে হ্রাস পেয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহা. সাইফুল ইসলাম (সম্রাট) ও মো. জসিম উদ্দিন মিন্টু, ট্রেজারার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান, পাবলিকেশন ও পাবলিসিটি সেক্রেটারি ফরিদ আহমেদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আবু হোসেন ভূইয়া (রানু), মো. জিয়াউল ইসলাম, মো. ইউনূছ আলী, মো. আসলাম সেরনিয়াবাত এবং ডা. মো. আনিসুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।