কোরবানির চামড়া ব্যবস্থাপনায় মন্ত্রণালয়ের তিন কমিটি
প্রতিবছর কোরবানির পশুর চামড়া দাম এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে তৈরি হয় নানা জটিলতা। কাঁচা চামড়ার সংরক্ষণের অজুহাতে পাইকাররা দাম পাননে বলে অভিযোগ আছে বহুবছর ধরে। অন্যদিকে ট্যানারিগুলো শতভাগ ইটিপি বাস্তবায়ন না হওয়ার সুযোগ বাইরে গুদামজাত করে চামড়া সংরক্ষণ করে থাকে। মাঝখান দিয়ে প্রতিবছর কাঁচা চামড়ার সংরক্ষণ এবং দাম নিয়ে দেখা দেয় ধন্দুমার কান্ড। তবে এবার একটু আগেভাগেই সচেতন হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়।
কোরবানির চামড়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৯ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোরবানির চামড়া যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতা পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টিসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিগুলো পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রয়োজনীয় চামড়া ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কন্ট্রোল সেল স্থাপন করবে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে জনসচেতনামূলক প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সিটি করপোরেশন এলাকায় সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের সচিব কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন- বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি, ডিআইজি সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের প্রতিনিধি, বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) প্রতিনিধি, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক, বিসিক আঞ্চলিক কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের পক্ষে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের প্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতির প্রতিনিধি।
জেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটির সভাপতি সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)।
কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা পুলিশ সুপার, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, জেলা তথ্য কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক, সংশ্লিষ্ট জেলার বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ডেন্টের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়রের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জেলা চামড়া ব্যবসায়ী বা আড়তদার সমিতির সভাপতি।
উপজেলা পর্য়ায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমিটির সভাপতি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমিটির সদস্য সচিবের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, বিসিকের কর্মকর্তা, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, চামড়া ব্যবসায়ী বা আড়তদার সমিতির সভাপতি।
এছাড়া কমিটিগুলো চামড়া পাচার রোধে কোরবানির দিন থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাঁচা চামড়া যাতে ঢাকা অভিমুখে পরিবহন না করা হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মসজিদ, মাদরাসা, এতিম খানা ও অন্যান্য স্থানে সংরক্ষিত কাঁচা চামড়ায় যথাসময়ে প্রয়োজনীয় লবণ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে শহরগুলোতে চামড়া ক্রয়ের আড়ত/স্থান পরিস্থিতি মনিটরিং করা, সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে লবণের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখা, বিশেষ পরিস্থিতিতে উদ্বৃত্ত কাঁচা চামড়া অস্থায়ী ভিত্তিতে সংরক্ষণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা উপযুক্ত কোনো স্থান ব্যবহার করা ও লবণের পরিবহন নির্বিঘ্নকরণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।