৪ জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ৬


প্রকৌশল প্রতিবাদক :
৪ জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ৬
  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন ৪ জেলায় সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার নরসিংদী, কুমিল্লা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। রায়পুরা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন— বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বটতলীকান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৪০), বালুয়াকান্দি গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে মো. সালাউদ্দিন মিয়া (৩০) এবং সোবহানপুর গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬)।

পুলিশ জানায়, নিহত দুলাল মিয়া আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক এবং সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী রাতুল হাসান ওরফে জাকির হোসেনের সমর্থক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই ভোর ৬টার দিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টেটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ২ পক্ষের লোকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থকদের গুলিতে প্রতিপক্ষের ২ জন মারা যান। এছাড়া রাতুল হোসেনের সমর্থকদের হামলায় আশরাফুল হকের একজন সমর্থক নিহত হন।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আমিরাবাদ কেন্দ্রে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বল্লভেরকান্দি গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে শাওন আহমেদ (২৫)।

কুমিল্লা দাউদকান্দি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল রানা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদের ২ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আক্তারুজ্জামান পুতু নামে একজন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় খুরুশকূল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আক্তারুজ্জামান পুতু (৩৫) খুরুশকূল ইউনিয়নের তেতৈয়া গুইল্ল্যাবাপের পাড়ার মমতাজ আহমদের ছেলে। ভোট কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার নুরুল হুদা ও পুলিশ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রিসাইডিং অফিসার নুরুল হুদা জানান, 'দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাধারণ সদস্য প্রার্থী আনোয়ারা বেগম ও আবু বক্কর সিদ্দিকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৩ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আক্তারুজ্জামান পুতু নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।'

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রিপন চৌধুরী জানান, 'গুলিবিদ্ধসহ আহত অবস্থায় ৬ জনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৩ জন পুলিশ সদস্য। নিহতের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় ২ ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম মো. শফি (৫৫)।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, '৮ নং ওয়ার্ডে দুপুর ২টার দিকে শফিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় মাহবুবুল আলম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।' পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি।