বিশ্বে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম: টিআইবি


প্রকৌশল নিউজ:
বিশ্বে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম: টিআইবি
  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এবার ২০১৯ সালের তুলনায় দুর্নীতিতে বাংলাদেশ দুই ধাপ নিচে নেমেছে। টিআইবির তথ্যানুযায়ী, ১৮০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিক থেকে ১২তম এবং উপরের দিক থেকে ১৪৬ তম। ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ এই জরিপের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তালিকায় সবচেয়ে কম স্কোর ১২ পেয়ে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ হয়েছে যৌথভাবে সাউথ সুদান ও সোমালিয়া।

বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংস্থাটির  নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ তথ্য প্রকাশ করেন। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করে থাকে বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে প্রথম হয়েছে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। তালিকায় এর পরের অবস্থানে রয়েছে- ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, লুক্সেমবার্গ, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা।

অন্যদিকে তালিাকায় সবচেয়ে কম স্কোর ১২ পেয়েছে সাউথ সুদান ও সোমালিয়া। এছাড়া ৬২টি দেশের স্কোর বেড়েছে। আর ৭০টি দেশের স্কোর আগের মতই রয়েছে। এর বাইরে ৪৮টি দেশের স্কোর নেমেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ১০০-এর মধ্যে ৪৩ স্কোরকে গড় হিসাবে নিয়ে সিপিআই ২০২০ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২৬ যা ২০১৮ ও ২০১৯-এর তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে।

দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের এই অবস্থান হতাশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই স্কোর অনুযায়ী বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনও উদ্বেগজনক। এছাড়া এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ সর্বনিম্ন অবস্থানে। আর দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে আফগানিস্তানে কেবল বাংলাদেশের চেয়ে দুর্নীতি বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের সিপিআই অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান। দেশটির স্কোর ৬৮ ও সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী সূচকে অবস্থান ২৪ যা ২০১৯ সালের সমান স্কোর হলেও অবস্থানে ১ ধাপ এগিয়েছে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী এবারের সিপিআই-এ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে মালদ্বীপ। দেশটি এবার পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে বড় ধরনের উল্লম্ফন দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে মালদ্বীপ। গতবারের তুলনায় দেশটির স্কোর ১৪ পয়েন্ট বেড়ে এবার হয়েছে ৪৩ এবং ৫৫ ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে ৭৫তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গতবারের তুলনায় এবারের তালিকায় দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থান হারিয়ে তৃতীয়তে নেমে গেছে ভারত। ভারতের স্কোর ১ কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ এবং অবস্থান ছয় ধাপ নেমে হয়েছে ৮৬। এরপর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটি গতবারের মত ৩৮ স্কোর ধরে রাখতে পারলেও এক ধাপ পিছিয়ে ৯৪তম অবস্থানে এসেছে। এরপর রয়েছে নেপাল, দেশটি গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম পেয়ে স্কোর অর্জন করেছে ৩৩ এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ৪ ধাপ পিছিয়ে ১১৭তম অবস্থানে রয়েছে। গতবারের মত এবারও ১ পয়েন্ট কম অর্থাৎ ৩১ স্কোর পেয়ে ৪ ধাপ পিছিয়ে ১২৪তম অবস্থানে নেমে গেছে পাকিস্তান।

অন্যদিকে তৃতীয়বারের মত ২৬ স্কোর অপরিবর্তিত রয়েছে বাংলাদেশের। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মাঝে বাংলাদেশের পরে অবস্থানে করছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ সিপিআই সূচক অনুয়ায়ী ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে অষ্টমবারের মত এবারও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।