১৫ হাজার জনবল নিয়োগের কথা জানালেন রেলমন্ত্রী
বিএনপি–জামায়াত সরকারের সময়ে ১০ হাজারের অধিক জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে বিদায় করলেও বর্তমান সরকার আগামীতে ১০-১৫ হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী নিয়োগ দিবে উল্লেখ করে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, রেলওয়েতে নিয়োগ বিধিমালা সম্পন্ন হয়েছে। এই বিভাগে অনেক জনবলসংকট রয়েছে। জনবলসংকটে ব্যাহত হচ্ছে রেলসেবা। রেলসেবা ত্বরান্বিত করতে দু-এক মাসের মধ্যে ১০-১৫ হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিএনপি–জামায়াত সরকারের সময়ে ১০ হাজারের অধিক জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে বিদায় করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার রেলসেবাকে সেই ভঙ্গ দশা থেকে উদ্ধার করে মূল স্রোতে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে।
সোমবার বিকেলে দিনাজপুর রেলস্টেশন চত্বরে স্টেশন প্ল্যাটফর্ম উঁচু ও বর্ধিত প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রেলপথমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরীসহ অনেকে।
নূরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেলপথের। সেই রেলপথকে পুনরায় ঢেলে সাজানোর কাজ করছে সরকার। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে রেলব্যবস্থাকে সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, কিন্তু ’৭৫ সালে তাঁকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে রেলের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।
নূরুল ইসলাম বলেন, যে দেশ যত উন্নত, সে দেশের রেলব্যবস্থাও তত উন্নত। কিন্তু বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রেলব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল। আমরা ইতিমধ্যে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ৫০টি রেলস্টেশনের সম্প্রসারণ, প্ল্যাটফর্ম উঁচু করাসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেছি। একসময় ২২টি ট্রেন চলাচল করলেও এখন সেখানে ৪২টি ট্রেন চলাচল করছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেলের ডাবল লাইন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া যমুনা সেতু পার হওয়ার পরে শহীদ মনসুর আলী স্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া সরাসরি নতুন রেললাইন চালু করার কথাও জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে রেলের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে রেলমন্ত্রী বলেন, খুলনা পর্যন্ত রেলসেবা ছিল। বর্তমানে তা মোংলা পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দিনাজপুর থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন যাতায়াত করবে। এ ছাড়া পঞ্চগড় থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি দার্জিলিং পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের সমীক্ষা চলছে।
কয়েক বছরে রেলসেবার মান বেড়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, রেলকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি বিধায় পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেছি। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। রেলে একসময় টিকিট কালোবাজারি ছিল। আমরা প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে তা দূর করতে চেষ্টা করছি। এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করতে যদি রেলের কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারীও জড়িত থাকেন, আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’