গার্মেন্ট শ্রমিকদের সহায়তায় হাজার কোটি টাকার বেশি দেবে ইইউ
করোনাভাইরাস মহামারিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সহায়তার জন্য ১১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা সমমূল্যের আর্থিক সহায়তা।
মুলতঃ ছাঁটাই ও মজুরি কর্তনের শিকার শ্রমিকদের সহায়তার জন্যই এই সহায়তা দেওয়া হবে বলে ইইউ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইইউ বাংলাদেশে উৎপাদিত পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। করোনার কারণে এই বছরের শুরু থেকে কয়েক কোটি ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশে গার্মেন্ট খাত। দুর্ভোগে পড়েছেন এই খাতে কর্মরত লাখো শ্রমিক।
এক বিবৃতিতে ইইউ জানায়, বাংলাদেশের নতুন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় গার্মেন্ট, চামড়া ও জুতা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের প্রাথমিকভাবে তিন মাস ৩ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।
এই বছরের শুরুতে মিয়ানমারের গার্মেন্ট শ্রমিকদের জরুরি সহায়তা দেওয়া জার্মানি ও ইইউ একত্রে বাংলাদেশি প্রকল্পে ১১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজি টেরিঙ্ক বলেন, গুরুত্বপূর্ণ রফতানি খাতের বেকার ও দুর্ভোগে পড়া শ্রমিকদের ইনকাম সহযোগিতা প্রদান জীবিকা সুরক্ষায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ।
প্রেসার গ্রুপ ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইনের তথ্য অনুসারে, তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিল হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ৫৮০ কোটি ডলার মজুরি লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা।
পোশাক রফতানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সম্প্রতি কিছু অর্ডার পুনরুদ্ধার করেছে। কিন্তু কারখানা মালিকরা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজারে অর্ডার ধীরগতির হয়েছে এবং কিছু ব্র্যান্ড অর্থ আটকে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে গার্মেন্ট খাতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক নিয়োজিত। এদের বেশিরভাগই নারী। দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে এই খাতটি গুরুত্বপূর্ণ। আগস্টে বাংলাদেশে গার্মেন্ট মালিকদের শীর্ষ সংগঠন জানিয়েছিল, অন্তত ৭০ হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। তবে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলো মনে করে এই সংখ্যা আরও বেশি।
ইইউ’র সহায়তা পেতে পারেন এমন শ্রমিকের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। কারণ মালিক ও ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ছাঁটাই ও মজুরি কর্তনের শিকার শ্রমিকদের তালিকা হাতে পায়নি। এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইইউ’র দেওয়া তহবিল শেষ হয়ে গেলেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বজায় রাখা হতে পারে।
শ্রম অধিদপ্তরের মিজানুর রহমান বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির প্রথম ধাপ হলো আর্থিক সহায়তা। অপর উন্নয়ন অংশীদার ও নিজেদের অর্থায়নে এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আামদের।