বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, একই সূত্রে গাঁথা: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে যেমন বঙ্গবন্ধুকে চিন্তা করা যায় না; তেমনি বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা যায় না।
খাদ্য মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের জন্য একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্বাধীন একটি দেশ উপহার দেবার মাধ্যমে এদেশের জনগণকে পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তার সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয় ১৯৭১সালের ১৬ ডিসেম্বর।
স্বাধীনতার পর তিনি যখন বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে দেশটাকে পুনর্গঠন করে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাকে সপরিবারে হত্যা করে।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা কে হত্যা করলেও তারা তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তিনি বলেন, জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু আরো বেশি শক্তিশালী। তার আদর্শ প্রতিটি মানুষের অন্তরে অন্তরে পৌঁছে গেছে। এটাকেই এই স্বাধীনতা বিরোধীদের ভয়। আর এ কারনেই এই অশুভ চক্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে চলেছে।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ও বিজয় দিবস ২০২০ উপলক্ষে বুধবার সকালে খাদ্য ভবনের নিচ তলায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এ কথা বলে তিনি। পরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে খাদ্য ভবনের সভাকক্ষে বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই ভাস্কর্য রয়েছে। অনেক মুসলিম দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বাংলাদেশে যে অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি তা তারা নস্যাৎ করতে চাই।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশকে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এটাও তাদের গাত্রদাহ সৃষ্টি করছে। তাই তারা আবার নিত্য নতুন কৌশলে নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো হয়েছে। এটা এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। কিন্তু এ স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের চোখে কোন উন্নয়ন ধরা পড়ে না, তাই তারা প্রতিটি কাজের ই বিরোধিতা করে থাকে, ষড়যন্ত্র করে থাকে। তারা আসলে দেশের কোন উন্নয়ন চায় না।
মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহবানে "৭১ এ যখন যুদ্ধে যাই তখন ভাবি নাই ফিরে আসবো। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন সেই সংবাদ পাওয়ার পর সেদিনের সেই যে অনুভূতি তা কোনদিন ভোলার নয়।
খাদ্যমন্ত্রী উপস্থিত সকলকে আহ্বান করে বলেন, আমরা যে যেখানে আছি প্রত্যেকে যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে অচিরেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবো। আমরা যদি সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ নির্মাণ করে যেতে পারি তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম একটি আবাসযোগ্য, সুখী-সমৃদ্ধশালী উন্নত-দেশ পাবে। আর এটা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, দেশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যে যেখানে আছেন; সেখানে থেকে দেশকে ভালোবেসে, দেশ প্রেম জাগিয়ে তুলে, দেশের উন্নয়নের জন্য সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজ মোল্ল্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির মহাপরিচালক শহীদুজ্জামান ফারুকীসহ খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।