রাষ্ট্রপতির কাছে ইসির নালিশ বিএনপির তৈরি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া ৪২ বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠির খসড়া বিএনপি তৈরি করেছে।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রগতিশীল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী) আয়োজিত মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী এসময় বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) দেখলাম যে দেশের ৪২জন বিশিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তারা সবাই বিএনপি ঘরানার হিসেবে পরিচিত। তাদের কেউ কেউ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদেও আছেন এবং তারা প্রতিনিয়ত নানাভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বলে আসছেন। ব্যতিক্রমটা হচ্ছে এই ৪২ জন একসাথে হয়েছেন। অবশ্য বিবৃতিটা বিএনপি অফিস থেকে ড্রাফট করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং তারা বিএনপিরই প্রতিধ্বনি করেছেন।’
নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই সেটি নিয়ে আলোচনা হতেই পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু যে ভাষায় তারা বিবৃতি দিয়েছেন এবং মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন, সেটি বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিদীপ্ত কোনো কাজ বলে মনে হয়নি বরং বিএনপির ড্রাফট করা বিবৃতিই দিয়েছেন তারা।’
মন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজে বসবাস করি, এখানে বিতর্ক থাকবে, সমালোচনা থাকবে, কিন্তু বিতর্ক-সমালোচনা এমন হওয়া উচিত যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। অবশ্যই দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে। সরকার যেহেতু দায়িত্বে, সেখানে সরকারের সমালোচনা হতেই পারে, হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যেভাবে অন্ধের মতো সমালোচনা বিএনপি করছে, সেটা যদি বেশি শিক্ষিত মানুষগুলোও করেন, তাহলে মানুষ মনে করতে পারে এই শিক্ষিত মানুষগুলো হঠাৎ অশিক্ষিতের মতো কথা কেন বলছেন! সেই প্রশ্ন মানুষের মনে থেকে যায়।’
বিএনপি’র শনিবারের (১৯ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরোটা শুনলাম এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষোদগার না করে নিজের ঘরটা একটু সামলান। যারা নিজের নেতাদের সম্মান করতে পারে না, নিজের ঘরটাই সামলাতে পারে না, তারা দেশ সামলাবে কিভাবে!’
বক্তব্যের শুরুতেই আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আওয়ামী মুসলিম লীগের (পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মওলানা ভাসানী কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন নাই, আজীবন দেশ ও মানুষের সেবায় রাজনীতির মহান ব্রত পালন করেছেন।’
প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী)’র কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক পরশ ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ সরওয়ার হোসাইন বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছা বক্তা হিসেবে প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী) এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী কিসমত, মোহাম্মদ বাবুল আহম্মেদ, মনিরুল হাসান মনির, মোসুমী রহমান মিনু, সাইফুল ইসলাম লিটন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, যুবলীগ কেন্দ্রীয় সদস্য মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য দেন।