রূপগঞ্জে বাবা-ছেলের নেতৃত্বে অবরোধবিরোধী সমাবেশ
রূপগঞ্জে অবরোধবিরোধী মিছিল-সমাবেশে অংশ নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার ছেলে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মূর্তজা পাপ্পা। এদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পথসভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) গোলাম দস্তগীর গাজীর নেতৃত্বে সকাল ৯টায় পূর্বাচল থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
কর্মসূচিতে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, “অবরোধে জনগণের সাড়া নেই। বিএনপি জামায়াত যেন কোনো নৈরাজ্য করতে না পারে, সেজন্য আমরা রাস্তায় আছি।”
মন্ত্রী রূপগঞ্জের পূর্বাচলের জয়বাংলা চত্বর, রূপগঞ্জের শুমু মার্কেট এলাকা, কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা ও মুরাপাড়া সমাবেশ ও মিছিল করেন।
উপজেলার গুরত্বপূর্ণ ৬টি স্থানে পথসভা করেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী গোলাম মূর্তজা পাপ্পাও। বাবা-ছেলের নেতৃত্বে এদিন মাঠে সরব হয়ে ওঠে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পথসভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এক পথসভায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি যেন আগুন খেলা করতে না পারে সে জন্য মাঠে আছি। মাঝে মধ্যে ওরা বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তবে জনগণের জানমালের তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারছে না। গাড়ি-ঘোড়া সব চলছে।”
তিনি বলেন, “যত যাই করুক, তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিতে পারবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে জনগণ কাজ করে যাচ্ছে। অবরোধকারীরা জনগণের যাতে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে আছি।”
এদিকে, অন্য এক পথসভায় বিএনপি জামায়াতের দেওয়া অবৈধ অবরোধ জনগণ মেনে নেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি গোলাম মূর্তজা পাপ্পা।
বৃহস্পতিবার সকালে রূপগঞ্জের তারাব বিশ্বরোড এলাকায় রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে গোলাম মূর্তজা পাপ্পা বলেন, “দিনের বেলায় রাস্তা আসুন, চোরাগুপ্তা হামলা করে জনগণের সম্পদ নষ্ট করে আপনাদের কোনো লাভ নেই।”
তিনি বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী জানুয়ারি মাসে আমাদের নির্বাচন, আপনারা সংবিধানকে অবহেলা করছেন। আপনারা জানেন, আমাদের প্রত্যেকটি ঘরে শিশু আছে। এই পরীক্ষার সময় তাদের স্কুলে যেতে বাধা সৃষ্টি করছেন। পিতা-মাতা চিন্তিত থাকছে। স্কুলের শিশুর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে আপনারা কি জনগণের ভালোবাসা পাবেন?”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির যদি কোনো দাবি-দাওয়া থাকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে তা উত্থাপন করতে পারত। কিন্তু বিএনপি তা করেনি। আপনারা (বিএনপি) আগেও তা করেন না, এখনও করছেন না। আপনারা জনগণের সম্পদ ধ্বংস করছেন। আপনারা অবৈধ অবরোধ দিয়েছেন, কিন্তু আপনারা এসে দেখেন জনগণ অবরোধ মানেনি। যদি আপনারা আমাদের কোনো সম্পদ ধ্বংস করেন, আপনারা যদি কোনো শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট করেন, আপনাদের প্রতিরোধ করার জন্যে আমরা যারা জনগণ আছি আমরাই যথেষ্ট।”
গোলাম মূর্তজা বলেন, “আপনারা (বিএনপি) পুলিশের গায়ে হাত তুলেছেন, পুলিশকে নিহত করেছেন, সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলেছেন, আপনারা হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছেন। পুলিশের গায়ে যে ইউনিফর্ম সেটি ১৬ কোটি মানুষের দেওয়া ইউনিফর্ম, পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া যায় না। আপনাদের এই ভুলের খেসারত দিতে হবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “শান্তিকামী মানুষ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়া দিচ্ছে। তাদের কাজ হচ্ছে কেউ কোথাও অরাজকতা করলে, জনগণের সম্পদ ধ্বংস করতে চাইলে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা এবং সম্মিলিতভাবে ওদের রুখে দেওয়া। বিএনপি জামায়াতের যেকোনো অবৈধ ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি জনগণ প্রতিহত করে দেবে।”
এদিকে, সকালে প্রথমে তারাব বিশ্বরোড এলাকায় মিছিল ও সমাবেশ হয়। পরে মুড়াপাড়া বাজার ও মঠের ঘাটে মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, ভোলাব ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল ও সমাবেশে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এসময় তারা 'গাজী গাজী' স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তুলেন।
অবরোধবিরোধী মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ, মাহবুর রহমান মেহের, জেলা পরিষদ সদস্য আনছর আলী, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাস, ভূলতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান আরিফ, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি কামরুল ইসলাম তুহিন, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমন হাসান খোকন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ফিরোজ ভূইয়া, ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান দাউদ মোল্লা ও তারাব পৌর প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম মনিরসহ আরও অনেকে।