সার্টিফিকেট জাল, চাকুরী বহাল!


ম. শাফিউল আল ইমরান
সার্টিফিকেট জাল, চাকুরী বহাল!
  • Font increase
  • Font Decrease

জাল সার্টিফিকেট দিয়েও চাকুরীতে বহাল তবিয়তে আছেন টঙ্গী সড়ক বিভাগের কার্য সহকারী মো. হানিফ ও একই বিভাগের মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। দীর্ঘ ৫ বছর আগে তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও অজানা খুটির জোরে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন দু’জন।

প্রকৌশলনিউজ ডটকমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মো. হানিফ ও মো. মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে সেই সময়কার সওজের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান একটি ‘দুই’ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটিতে ছিলেন তৎকালীন সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমীরি খান ও সওজের উপ সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

দুই সদস্যর তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে ‘তদন্ত’ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। পরবর্তিতে তদন্ত কমিটি উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত দুইজনকে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের লিখিত বক্তব্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে বলা হলে তারা (অভিযুক্তরা) লিখিতভাবে বিস্তারিত বর্ণনা করেন যা প্রকৌশল নিউজের কাজে সংরক্ষিত আছে।

সেখানে তদন্ত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ আছে, দুই অভিযুক্ত মো. হানিফ ও মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তাদের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে মো. হানিফের লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, তিনি প্রথমে ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে চাকুরীতে যোগদান করলেও পরবর্তীতে পদ পরিবর্তন করে কার্য্য-সহকারী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। কিন্ত তার এসএসসি ও এইচএসসি পাশের কোন সার্টিফিকেট নাই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম প্রথমে বনানীতে কার্য-সহকারী হিসেবে যোগদান করলেও বর্তমানে টঙ্গী সড়ক বিভাগে কর্মরত আছেন। তার এসএসসি সার্টিফিকেট থাকলেও এইচএসসির কোন সার্টিফিকেট নেই বলে তদন্ত কমিটির নিকট দেওয়া লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন। 
পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে গাজীপুর সড়ক বিভাগে গিয়ে তাদের সার্ভিস বুক পরীক্ষা করেন। সেখানে তদন্ত কমিটির দেখতে পায়, মো. হানিফ তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেনী উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি থাকলেও এইচএসসির ঘরে এসএসসি উল্লেখ করেন। তবে, তদন্ত কমিটি মঞ্জুরুলের শিক্ষাগত যোগ্যতা দুইবার এসএসসি উল্লেখ থাকার কারণ বুঝতে পারেনা। কিন্তু সে যেহেতু পূর্বে এসএসসি ছাড়া কোন সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনাই তাই এসএসসি পাশকে আমলে নেয়।

পরবর্তীতে কমিটি তাদের ‘তদন্ত প্রতিবেদন’ তখনকার সড়কের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর নিকট পাঠায় (স্মারক-২৫৬৬) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। কিন্ত কোন এক অজানা কারণে তা আজও আলোর মুখ দেখে নাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে শুধু একজনের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে  মো. মঞ্জুরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমাদেরমত অনেক আছে, আমাকে বাদ দিলে তো সবাইকে বাদ দিতে হবে।

তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমার আগে যারা আছে, তাদের কী করবেন।’