একটি হুইল চেয়ারের জন্য কান্না!


বাপ্পী রহমান
একটি হুইল চেয়ারের জন্য কান্না!
  • Font increase
  • Font Decrease

নিভূত পল্লীর পথে-প্রান্তরে কত ঘটনাই চোখে পড়ে, তেমনি একদিন রাস্তার পাশে বাড়ির উঠানে দেখা মিলল শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের। মেয়েটির নাম সুইটি। ছোট অবুঝ শিশুটির পা থেকেও নেই। দুটি হাতের আঙ্গুলের উপর ভর করে মাটি ঘেঁষে চলাচল করছে। শীতের এই তীব্রতায় মোজা বা জুতা ছাড়াই চলাচল করছে সে। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের মেয়েটি একটি হুইল চেয়ারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

কথা বলে জানা গেল, তার একটি হুইল চেয়ার প্রয়োজন। মেয়েটির আকুতি, ‘একটি চেয়ার চাই।’ 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সুলতানপুর বাড়াইপাড়া (ডিগিপাড়া) গ্রামের সলেমান প্রামাণিকের মেয়ে সুইটি আকতার। জন্ম থেকেই সুইটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। পা দুটি দিয়ে কোনও ভাবেই হাটা চলা করতে পারে না, পায়ের অধিকাংশই বাঁকা। হুইল চেয়ার না থাকায় হাতের আঙ্গুলের উপর ভর করে মাটি ঘেঁষে চলাচল করে সে। চলাচল করতে খুব কষ্ট হয় তার। মাটি ঘেঁষে চলাচল করায় হাত ও পায়ে ফোসকা পড়েছে। চোখমুখে হতাশা নিয়ে সুইটি বলল, ছবি তোলেন কেন ? আগে কতবার ছবি উঠেছে একটা হুইল চেয়ার পাইনি। হুইল চেয়ার হলে কিছুটা স্বাভাবিক চলাচল করতে পারতাম। আমারে একটি হুইল চেয়ার দিবেন?

প্রতিবেশী জব্বার মিয়া বলেন, সুইটি আকতার গরীব পরিবারের মেয়ে। এই শীতের মধ্যে সে মাটিতে চলাফেরা করে। ওর দিকে তাকালে খুব কষ্ট লাগে। কত কষ্ট করে চলাচল করে সুইটি। তার একটি হুইল চেয়ার খুব দরকার।

সুইটির মা মনিরাজ বেগম বলেন, বাড়ি-ভিটা ছাড়া কোনো জমি নাই আমাদের। বাড়িতে ছোট একটি দোকান। যা আয় হয় তা দিয়ে পেটের ভাত জোটে না। কিভাবে হুইল চেয়ার কিনে দেই।

সুইটির খোঁজ খবর নিতে কথা হয় কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম রিংটুর সঙ্গে। তিনি জানান, সুইটি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারে না। সরকারি ভাতা সে পায়। আমিও মাঝে মধ্যে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকি। সুইটির হুইল চেয়ার না থাকায় খুব কষ্টে করে চলাচল করে। নিজ উদ্যোগে একটি হুইল চেয়ার দেয়ার ব্যবস্থা করছি বলে জানান তিনি।