হেফাজতের কাসেমী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার


প্রকৌশল প্রতিনিধি:
হেফাজতের কাসেমী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার
  • Font increase
  • Font Decrease

সদ্য বিলুপ্ত হওয়া হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি আবদুর রহিম কাসেমীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইছ উদ্দিন গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি হেফাজতের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এর আগে হেফাজতের সহিংসতায় জড়িতদের বিচার দাবি করে পদত্যাগ করেছিলেন কাসেমী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘হামলার ঘটনার পর থেকে আবদুর রহিম কাসেমীর গতিবিধি নজরদারি করে আসছিল পুলিশ। বিকেল ৪টার দিকে সিএনজি অটোরিকশায় করে শহরের দক্ষিণ দিকে যাওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তাণ্ডবের ঘটনায় তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মাওলানা আবদুর রহিম কাসেমীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া তাকে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের একাধিক মামলায় আসামি করা হতে পারে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জানা যায়, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচি চলাকালে তাণ্ডবের ঘটনার মূল হোতা এবং প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন কাসেমী। তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সরকার উৎখাতের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসাসহ আশেপাশের বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষককে নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হেফাজতের তাণ্ডবে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

এর আগে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি। গত ২৩ এপ্রিল হেফাজতের তাণ্ডব ইস্যুতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠান আবদুর রহিম কাসেমী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত হতে পারে না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্ত কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় থাকি এবং আমার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সব মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের এসব দেশ ও ইসলামবিরোধী কাজে যোগদান না করতে বাধ্য করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে হেফাজতে ইসলামের সব কার্যক্রম ও জাতীয় এবং জেলা কমিটির পদ থেকে পদত্যাগ করছি। যাদের প্ররোচণায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।’

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অর্ধশতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা। এ সব ঘটনায় ৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলাগুলোতে এজাহারনামীয় ৪১৪ জন ও অজ্ঞাত ৩৫ হাজারেরও বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৪১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রকৌশল নিউজ/প্রতিনিধি/এমআরএস