তুরস্কে কারাবন্দি একরামকেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ঘোষণা


আন্ততর্জাতিক ডেস্কঃ
তুরস্কে কারাবন্দি একরামকেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ঘোষণা
  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্কের পিপলস রিপাবলিক পার্টি বা সিএইচপি নেতা এবং দেশটির ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগ্লুকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে তার রাজনৈতিক দল। যদিও তিনি বর্তমানে কারাবন্দি আছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) দলের একজন মুখপাত্র এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পিপলস রিপাবলিক পার্টি বা সিএইচপি একটি বামঘেঁষা রাজনৈতিক দল এবং এই মুহূর্তে তুরস্কের বৃহত্তম বিরোধী দল।

সম্প্রতি ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫৮ বছর বয়সী একরাম ইমামোগ্লু সিএইচপির অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারপরই ১৯ মার্চ এক বিশেষ অভিযানে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর রোববার তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। সেখানে একরামের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড করা, টেন্ডারবাজী এবং অপরাধী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনে তুরস্কের পুলিশ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। আদালত এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ইমামোগ্লু অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ১৯ মার্চ আটকের পর রিমান্ডে নেওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, “কখনও মাথা নত করব না।”

রাজনীতিবিদ হিসেবে একরাম ইমামোগ্লু তুরস্কে বেশ জনপ্রিয়। ২০১৯ সালে তিনি প্রথম ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং জয়ী হন। কিন্তু তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল এই নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেয়। সেই নির্বাচনে আরও বড় ব্যবধানে জয়ী হন ইমামোগলু। এই বিজয় তাকে শুধু ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবেই নয়, বরং সমগ্র বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

সম্প্রতি ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইমামোগ্লু। তারপরই ১৯ মার্চ তাকে আটক করা হয়।

তাকে আটকের খবরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তার সমর্থকরা। সেই বিক্ষোভ এখনও চলছে। রোববার পর্যন্ত তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের অন্তত ৫৫টিতে ইমামোগ্লুর পক্ষে সমাবেশ হয়েছে বলে প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।

তাকে গ্রেপ্তারের পর রোববার রাতে তুরস্কজুড়ে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর ছোড়া হয়েছে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট।

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং তার রাজনৈতিক দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) অভিযোগ, একরাম ও তার দল সিএইচপি’র সঙ্গে তুরস্কের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) গোপন আঁতাত রয়েছে। তবে একরাম ইমামোগ্লু এবং সিএইচপি নেতারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বর্তমানে তাকে ইস্তাম্বুলের সিলিভ্রি এলাকার একটি কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো।

ইমামোগ্লুকে জেলে পাঠানের প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কজুড়ে যে বিক্ষোভ চলছে, তাকে ২০১৩ সালের গাজি বিক্ষোভের পর সবচেয়ে বড় বলা হচ্ছে। এক যুগ আগে স্থানীয় একটি পার্ক গুড়িয়ে দেওয়ার পর ওই বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।