পরকীয়ার কারণে ডিশ লাইনের তার পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা
পরকীয়া প্রেমের কারণে এক দিনমজুরকে গলায় ডিশ লাইনের তার পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নিহতের নাম আলমগীর হোসেন (২২)। তিনি সাতক্ষীরা সদরের বকচরা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করেছে।
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে সাতক্ষীরা সদরের বকচরা গ্রামের আফছার আলীর পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের মা সুফিয়া খাতুন জানান, তার ছেলে আলমগীর হোসেন একজন দিনমজুর। বৃহষ্পতিবার রাত ৯টার দিকে পার্শ্ববর্তী আছিয়ার দোকানে চা খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় আলমগীর। রাত বেশী হওয়ায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তিনিসহ স্বজনরা আলমগীরকে খুঁজতে বের হন। কিন্তু আলমগীরকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নাই।
শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে একই গ্রামের আফছার আলী তার পুকুরে একটি মৃতদেহ উপুড় অবস্থায় ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে সুফিয়া খাতুন পুকুর পাড়ে যান এবং সেখানে পড়ে থাকা জুতা দেখে লাশটি তার ছেলে আলমগীরের বলে দাবী করেন। পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করার পর দেখা যায় নিহতের গলায় ও মুখে ডিস লাইনের তার পেচানো ছিল। তাকে তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বালিয়াডাঙার ৯নং ওয়ার্ড সদস্য সামছুর রহমান জানান, গ্রামের ভাটা শ্রমিক আব্দুল জলিলের স্ত্রী ময়নার সঙ্গে দিনমজুর আলমগীরের পরকীয়া ছিলো। এ নিয়ে আলমগীরের সাথে জলিলের চরম বিরোধ দেখা দিলে তিনি শালিসের সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে জলিলের শাশুড়ি এসে মেয়েকে তার বাড়ি রামনগরে নিয়ে যায়। ঈদের পরে এ নিয়ে শালিসের কথা ছিল। এর মাঝেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো।
ইউপি সদস্য শাহাদাৎ হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য বিলকিস পারভিন বলেন, আলমগীরের সঙ্গে বালিয়াডাঙার এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
এদিকে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বালিয়াডাঙা গ্রামের জনৈক আব্দুল জলিলের স্ত্রী ময়না খাতুনের পরকীয়া ছিল এবং এ নিয়ে বিরোধও হয়েছে কয়েক বার। এই পরকীয়ার জেরেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন নিহতের বড় ভাই পরিবহন শ্রমিক মহিবুল।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক মিনহাজউদ্দিন জানান, শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে আলমগীরের লাশ বকচরা গ্রামের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডিস লাইনের তার গলায় পেচিয়ে আলমগীরকে শ্বাসরোধ করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যার কারণ জানার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে আলমগীরের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রকৌশল নিউজ/সু