অপহৃত কিশোরীকে পতিতালয়ে বিক্রির হুমকিতে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা
ঈদের দিন সন্ধ্যায় এক কিশোরীকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা এলাকা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবী করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে তাকে দৌলতদিয়া ঘাটে পতিতাপল্লীতে বিক্রি করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে এমনই একটি বার্তা প্রেরণ করে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়। বার্তা পেয়েই অনতিবিলম্বে মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দকে এটি প্রেরণ করে দ্রুততম সময়ে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
মুক্তাগাছা থানার ওসি প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন মেয়েটির বর্তমান অবস্থান রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার অন্তর্গত একটি এলাকায়। তাৎক্ষনিকভাবে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানকে নির্দেশনা দেয় ওসি মুক্তাগাছার সাথে সমন্বয় করে অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করতে।
কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য ওসি পাংশা এসআই মাসুদুর রহমান এবং এসআই মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দু’টি টিমকে নিয়োজিত করেন। সংশ্লিষ্ট জেলা সমূহের সাইবার ও ডিবি টিমসহ পুলিশের একাধিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টায় কিশোরীকে গতকাল ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার সরিষা ইউনিয়নের পিড়ালীপাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়।
অপহরনকারী হিসেবে চিহ্নিত দুর্জয়কে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার মেয়েটিকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেছেন। উদ্ধার অভিযানসহ অপারেশনাল সার্বিক বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করেছেন রাজবাড়ি জেলা পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান এবং ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মোহা: আহমার উজ্জামান।
মেয়েটিকে উদ্ধারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েক মাস আগে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুর্জয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেয়েটির। এক পর্যায়ে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে দুর্জয়ের সাথে পালিয়ে যায় মেয়েটি। দুর্জয় মেয়েটিকে প্রথমে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর, সেখান থেকে তার নানাবাড়িতে রেখে আসে মেয়েটিকে।
মেয়েটির সাথে কথা বলে জানা গেছে, সে দুর্জয়কে ভালবাসে এবং তার সাথেই থাকতে চায়। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, দুর্জয়ের দিকের কেউ বা এলাকার কোন দুষ্টচক্র কোনোভাবে মেয়েটির পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দুর্জয় ও মেয়েটির পরিবারের দুর্বলতার সুযোগে কিছু সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধিদের খুঁজে বের করে শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে। এই ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস