ফার্মাসিস্ট লাভলী হত্যা : এক মাস পর মাটিচাপা লাশ উদ্ধার
নওগাঁর রানীনগর থেকে নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পর শারীরিক প্রতিবন্ধী লাভলী খাতুন নামে এক নারী ফার্মাসিস্টের মাটিচাপা লাশ রানীনগর ও আশুলিয়া থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকার আশুলিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে লাভলী খাতুন (৩০) গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে বের হন। ওই দিন রাতে লাভলী বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়।
সকল আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া না গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি রানীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তখন থেকেই পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে ভবানীপুর গ্রামের নাছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল লতিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয় পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিতে একই গ্রামের আনাম মণ্ডলের ছেলে মাহবুব আলম বিস্কুটকে রানীনগর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার হালতি-খোলাবাড়া এলাকা থেকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায় তারা স্বীকার করেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ঢাকার আশুলিয়া থানার জিরাবো এলাকায় লাভলীকে হত্যা করে ডাক্তারবাড়ি নামক স্থানে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে রানীনগর থানার পুলিশ আটককৃত দুজনকে নিয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় ডাক্তারবাড়ি এলাকা থেকে লাভলীর মাটি চাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লাভলীর চাচাতো ভাই সুমন হোসেন। তিনি বলেন, লাভলী একজন ফার্মাসিস্ট। স্থানীয় বেতগাড়ী বাজারে প্রায় ছয় বছর ধরে ওষুধের দোকান দিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবাও দিতেন। সেই সূত্রে প্রতিবেশী দোকানদার বিস্কুটের সঙ্গে পরিচয়ের একপর্যায়ে লাভলীর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন তিনি। টাকা ফেরত নিতে লাভলী চাপ প্রয়োগ করলে বিস্কুট কৌশলে তাকে অপহরণ করে আশুলিয়া থানা এলাকায় নিয়ে লতিফের সহযোগিতায় হত্যা করেন।
আশুলিয়া থানার এসআই তানিম হোসেন জানান, রানীনগর থানার পুলিশের হাতে আটককৃতদের দেওয়া তথ্যমতে ডাক্তারবাড়ি এলাকা থেকে মাটি চাপা দেওয়া যে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি নওগাঁ জেলার রানীনগর থানার ভবানীপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী লাভলীর। লাশটি স্বজনরা নিশ্চিত করার পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, ঘাতক বিস্কুট বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক। বছরখানেক আগে সে তার মেয়ের বিয়ে দেয়। সে স্থানীয় বেতগাড়ি বাজারে হার্ডওয়্যার এর দোকান করতো। কিছুদিন আগে দেনার দায়ে পড়ে দোকান বেচে সে আশুলিয়ায় পালিয়ে আসে।