মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ অভিযুক্ত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। একইসময়ে সাবেক ওসি প্রদীপ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত ও কনস্টেবল সাগর দেবের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৭ জুন) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন।
রোববার চার্জ গঠনের ধার্য্যদিন হওয়ায় সকালে সাবেক ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, ২৭ জুন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার চার্জ গঠনের ধার্য্য দিন ছিল। এদিন সকালেই আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আগামী ২৬-২৮ জুলাই স্বাক্ষ্য দেয়ার দিন ধার্য করা হয়।
তিনি আরো বলেন, মামলায় অভিযুক্ত বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব ও বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের পক্ষের আইনজীবীরা ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬৫ (গ) ধারায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি ও জামিনের আবেদন করলেও আদালত শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন।
জানা যায়, সাবেক ওসি প্রদীপ ও এসআই নন্দদুলালের জামিন চেয়ে গত ১০ জুন আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন আদালতে নথি উপস্থাপিত না হওয়ায় শুনানি হয়নি। ১৩ জুন এ নিয়ে পুনরায় আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানির জন্য ২৭ জুন দিন ঠিক করেন।
এছাড়া এ মামলায় অভিযুক্ত কনস্টেবল সাগর দেব গত ২৪ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তার জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে। এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
উক্ত মামলায় ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম। মামলায় অভিযুক্ত ওসি প্রদীপের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব দীর্ঘ ১১ মাস পলাতক থাকার পর ২৪ জুন আত্মসমর্পণ করেন।