'মাসুদ'কে ভালো হয়ে যেতে বললেন হাইকোর্ট
কালো কোট পরে ভাড়ায় বাইক চালানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানাকে নিয়ে আইনাঙ্গনে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
কেউ বলছেন, মাসুদ রানা ভাইরাল হওয়ার জন্য এ কাজ করেছেন। অনেকে বলছেন, মাসুদ রানার মতো ব্যস্ত আইনজীবীর এমন আর্থিক দুরবস্থা হতে পারে না। আবার আইনজীবীদের অনেকেই তাকে সহমর্মিতা জানাচ্ছেন। বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারপতিদেরও নজর এড়ায়নি।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানাকে সতর্ক করে হাইকোর্ট বলেছেন, এসব করে আদালতের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না। ভালো হয়ে যান মিস্টার মাসুদ রানা। সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।
আইনজীবী মাসুদ রানার দুটি মামলায় দুই আসামির জামিনের আবেদন ছিল এ কোর্টে। সকালে মামলা দুটি শুনানি করতে গেলে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান তার বাইক চালানোর প্রসঙ্গ তোলেন। তখন আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি তাকে দেখে বলেন, মিস্টার মাসুদ আপনি বিখ্যাত হয়ে গেছেন উবার চালিয়ে। এগুলো করবেন না। পরে আদালত আইনজীবী মাসুদ রানার দুই মামলায় জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন।
গত ১৬ জুলাই বাইক রাইডিংয়ের একটি ছবি শেয়ার করে এডভোকেট মাসুদ রানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন। ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতি, আপনার কোর্ট অফিসার এখন বাইক রাইডার’ এ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেন, আইনপেশা লকডাউনে সম্পূর্ণ বন্ধ। লকডাউন ব্যতীত সময়ে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্ট ছিল। কিন্তু এখন লকডাউন স্থগিত হলেও কোর্ট বন্ধ। সব পেশার মানুষ কাজ করতে পারছেন, শুধু আইনজীবীরাই কর্মহীন।
তিনি আরও লিখেন, দীর্ঘ এক বছর চারমাস উপার্জনহীন থাকলেও বাড়িভাড়া, চেম্বার ভাড়া, বার কাউন্সিল, বার অ্যাসোসিয়েশনসহ জীবন-যাপন ব্যয় থেমে নেই। কোর্ট অফিসারদের (আইনজীবী) চরম দুর্দিন চলছে। আইনজীবীদের চিফ অথোরিটি মাননীয় প্রধান বিচারপতি, কিন্তু তাকে কিছু বলা যাবে না। আদালত অবমাননার অভিযোগে সনদ চলে যায়। অনেকেই আপদকালীন ভিন্ন পেশা গ্রহণ করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠরা কোর্ট খোলার আশায় আছেন। কিন্তু আমি অতি সাধারণ, তাই এত কিছু না ভেবে কর্ম এবং উপার্জনের লক্ষ্যে আপদকালীন এ বাইক রাইডিং পেশা শুরু করলাম। সবার নিকট দোয়া চাই। সবাই ভাল থাকবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএম