ছাএ জনতার গনহত্যাকারীদের দখলে কোনাপাড়ার রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল
রাজধানী ঢাকার ডেমড়ার কোনাপাড়ার রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল ছাএ জনতার গনহত্যাকারীদের দখলে। যাদের মধ্যে রয়েছে চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ খাইরুল ইমাম,এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিন এবং ম্যানেজার মোঃ জিল্লুর রহমান।
রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় অবস্থিত রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালের মালিকগণের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ খাইরুল ইমাম, এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিন এবং ম্যানেজার মোঃ জিল্লুর রহমান রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল নিয়ে ছেলে খেলায় মেতে উঠেছেন। পরিচালকদের বিনিয়োগকৃত টাকা ও শেয়ার হোল্ডারদের বিনিয়োগকৃত শেয়ার নিয়ে এই তিন জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
হাসপাতালটি মানবতার সেবার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালে স্থাপিত করা হয়। সুচনা লগ্নে এই হাসপাতালটি ১৫ জন পরিচালকের সমন্বয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার ইনভেষ্টমেন্ট এর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। বিভিন্ন পেশাজীবির ১৫ জন পরিচালক এর মাধ্যমে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করে। এরই মধ্যে এম ডি মো. জসিম উদ্দিন (৫০), বাশেরপুল এলাকার বাসিন্দা,ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান (৪৩), বাশেরপুল এলাকার বাসিন্দা এবং চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম (৫৫), মগবাজার ইস্কাটন এলাকার বাসিন্দা। এই ৩ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এর সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আজ তাদের কাছে হাসপাতালটি জিম্মি হয়ে পড়েছে এবং পাশাপাশি অন্যান্য পরিচালকগণ তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
হাসপাতালটির মেমোরেন্ডাম তৈরির সময় মো. জসিম উদ্দিন, মো. জিল্লুর রহমান এবং প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম অন্যান্য পরিচালকদের মতামত উপেক্ষা করে, প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম নিজেকে চেয়ারম্যান, মো. জসিম উদ্দিন নিজেকে এম ডি এবং মো. জিল্লুর রহমান নিজেকে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর পদে রেখে মেমোরেন্ডাম করে ফেলে। পরিচালক প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম কনসালটেন্ট হিসেবে এবং মো. জিল্লুর রহমান ম্যানেজার হিসেবে এর আগে ডেমরা এ্যারোমো হাসপাতালে দায়িত্ব পালনকালে চুরি ও আর্থিক অনিয়ম এবং দুর্নীতির দায়ে বিতাড়িত হন।
এ্যারোমো হাসপাতাল কতৃপক্ষ এর সাথে কথা বলে এর সত্যতার প্রমান মিলেছে। পরবর্তীতে মো. জসিম উদ্দিনকে সাথে নিয়ে তারা ডেমরা স্টাফ কোর্য়াটার এলাকায় পুনরায় একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার উদ্দ্যোগ নেয়। কয়েক মাসের মধ্যে সুকৈাশলে কয়েকজন পরিচালক জোগাড় করে অত্যান্ত দক্ষতার সাথে হলি এইড নামক একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম নিজেকে চেয়ারম্যান এবং মো. জসিম উদ্দিন নিজেকে এম ডি এবং জিল্লুর রহমানকে ম্যানেজার করে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করে। হাসপাতাল চালানোর জন্য মেশিনারিজ ক্রয় বাবদ, হাসপাতালের ডেকোরেশন বাবদ, হাসপাতালের বিভিন্ন টেস্টের রি-এ্যাজেন্ট ক্রয় বাবদ, বিভিন্ন টেস্ট বাহির হতে করানো বাবদ কমিশন, জনশক্তি নিয়োগ ও মেডিসিন ক্রয় করা বাবদ কমিশন, এসি, ফ্যান, টিভি-সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স কেনাকাটা বাবদ কমিশন, নতুন ডিরেক্টর নিয়োগ এবং পুরাতন ডিরেক্টরদের মতামত উপেক্ষা করে নিজের মন মতো হাসপাতাল পরিচালনা করতে থাকেন।
এদের মতের অমিল হলে ডিরেক্টরদের কৌশলে অপবাদ দিয়ে বের করে দেন। হাসপাতালের আয় ও ব্যয়ের হিসাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ থাকলেও ৩ ব্যক্তি যথেষ্ট প্রভাব ও ক্ষমতা বলে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছিলেন। এমতাবস্থায় কয়েকজন পরিচালক একতাবদ্ধ হয়ে ম্যানেজার জিল্লুর রহমান এবং এম ডি মো. জসিম উদ্দিনকে হাসপাতালের মধ্যে বেঁধে মারধর করেন বলে অভিযোগ আছে। এদের মধ্যে ১ জন মো. জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছে বলেও জানা গেছে। সেই মামলায় তিনি জেল খাটেন। বের হয়ে এসে পুনরায় বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে কৌশলের মাধ্যমে হাসপাতালের শেয়ার বিক্রি করেন। পরিচালক প্রফেসর ডা. খাইরুল ইমাম সুকৌশলে বেচে গেলেও, কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলা করে। হলি এইড হাসপাতাল হতে অপমানিত হয়ে বের হবার পর, ৩ ব্যক্তি পুনরায় ডেমরা কোনাপাড়া কাঁচা বাজার সংলগ্ন একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্দ্যোগ নেয়। পরিকল্পনা মাফিক কৈাশলগত কারণে প্রথমে কয়েকজন শিক্ষিত, নম্র, ভদ্র, সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের পরিচালক হিসেবে নেয়া হয়। ইতিমধ্যে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও কৈাশল হিসেবে নিজেদের মন মতো ও পছন্দ মত প্রতিষ্ঠান হতে মেশিনারিজ ক্রয় করে, হাসপাতাল ডেকোরেশন করে, ফার্নিচার ক্রয়ের মাধ্যমে, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী যোগ করে। জন শক্তি নিয়োগের মাধ্যমে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রথম দিকে অন্যান্য পরিচালকগণ তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বুঝতে পারেনি, বিভিন্ন বোর্ড মিটিং এ পরিচালকগণ হাসপাতালে মোট বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমাণ, খরচ এর পরিমাণ, অবশিষ্ট টাকা এবং প্রতিমাসের আয় ও ব্যয়ের পর ফান্ডে কত টাকা জমা আছে তার পরিমাণ জানতে চান। ৩ জনের কাছে বাকি মালেকগণ হিসাব চাইলে কেবল সময় চেয়ে এড়িয়ে যান এবং আজ পর্যন্ত হিসাব পরিচালকদের বোর্ড মিটিং এ জানানো হয়নি। হাসপাতালের নামে এ্যাকাউন্ট খোলা হলেও এ্যাকাউন্টের দায়িত্ব নেয় এই তিনজন। হাসপাতাল হতে আয়কৃত টাকা ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে জমা দেন না বলেও জানান বাকি মালিকগণ।
এ বিষয় এ রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর মো. জিল্লুর রহমান এর সাথে কথা হলে দৈনিক আজকের সংবাদকে বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন তারা রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালের নিজের লোক, আমার বিরুদ্ধে মামলা আছে ২ টি আমি জেল খেটেছি ১ মাস ৪ দিন। বর্তমান রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. খায়রুল ইমাম তার বিরুদ্ধেও আমি মামলা করেছি, কারণ আমার চেক বই ব্যাংক থেকে উঠিয়ে আমার স্বাক্ষর নকল করেছে এজন্য আমি মামলা দিয়েছি। প্রফেসর ডা. খায়রুল ইমামকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেনি। এ বিষয় রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালের এমডি মো. জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার নামটা কেন দিয়েছে আমি তা জানি না, আমি রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালে কোন দায়িত্ব নেই। আমি এম ডি পদ ছেড়ে দিয়েছি। এরকম কিছুই নাই রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালে। আমি কোন এমডি না, রয়েল মেক্স হাসপাতালে কোন পদই নেই আমার। খোজ নিয়ে জানা গেছে কৈাশলে তিনি তার মালিকানা তার বউকে দিয়ে দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, তথ্য প্রমানে উঠে এসেছে বাকি দুই হাসপাতালের মত এখানকার সকল কাজের মাস্টারমাইন্ড ও এই জসিম উদ্দিন।তিনি কৈাশলে মোঃ জিল্লুর রহমানকে ব্যবহার করে আড়ালে থেকে সকল কাজ পরিচালনা করেন।এখানেই শেষ নয় , খোজ নিয়ে জানা গেছে আরও ভয়ংকর তথ্য ম্যানেজার জিল্লুর রহমান চাকুরির দেয়ার নামে এবং চাকুরি দিয়ে হাসপাতালের আয়া, বুয়া ও অন্যান্য স্টাফদের সাথে কৈাশলে অনৈতিক কর্মকান্ডে মেতে উঠেছেন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের যেসকল স্টাফ এগুলো দেখেছেন তাদের হয় অপবাদ দিয়ে বের করে দিযেছেন বা চাকুরিচ্যুত করেছেণ।
সবচেয়ে ভয়ংকর যে তথ্যটি আমাদের দৈনিক আজকের সংবাদ এর কাছে এসে পৈাছেছে সেটি হল জুলাই এর ছাএ জনতার গন আন্দোলনের সময় ছাএ জনতার গন হত্যার সাথে জড়িত থাকার কারনে এই তিনজন আওয়ামীলিগ নেতা সহ আরও অনেকের নামে ঢাকার জজ কোর্টে মামলা হয়েছে এবং এদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে যে কোন সময়।
আদ দ্বীন হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল, হলি এইড হাসপাতাল এবং এ্যারোমো হাসপাতাল ও এখানকার স্টাফদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , এই তিন প্রতারকের কাজই হচ্ছে মানুষকে প্রতারনার ফাদে ফেলে তাদের কাছ হতে কৈাশলে টাকা হাতিয়ে নেয়া।এক জায়গায় ধরা খেলে কৈাশলে ঐ স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে চলে যাওয়া।
এদের মধ্যে মাস্টারমাইন্ড এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিন অত্যান্ত কৌশলে পরিচালকদের মধ্যে গ্রুপিং করে তাদের বিভিন্ন সুয়োগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেন , যখন তার ফাদ বা কৌশল অন্যরা ধরে ফেলে, তখন সর্ব শেষ ধরা খেয়ে ইনি কৌশলে তার পরিচালক পদ তার বউকে দিয়ে নিজে সরে পড়েছেন। এবং যাওয়ার আগে কৌশলে উকিলকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বোর্ড মিটিং ছাড়া এবং পরিচালকদের স্বাক্ষর জাল করে নতুন একটি মেমোরেন্ডাম তৈরি করে পরিচালকদের একটি বেড়াজালের মধ্যে ফেলে গেছেন এবং কিছু পরিচালককে কৌশরে বের করে দিয়ে এবং নতুন কিছু পরিচালককে হাসপাতালে ঢুকিয়ে , মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে সরে পড়েছেন বলে অভিাযোগ পাওয়া গেছে।এমতাবস্থায় বাহির হতে হাসপাতালের ঠাকা চুরির দায়ে অভিযক্ত মোঃ জিল্লুর রহমানকে দিয়ে মোঃ জসিম উদ্দিন হাসপাতাল পরিচালনা করে যাচ্ছেন।