চীনে পণ্য রফতানিতে ডিউটি-কোটা ফ্রি সুবিধা দেওয়ার কথা জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী
চীন ৯৭ ভাগ পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, এই সুবিধা ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে কার্যকর হয়েছে। চীন ও বাংলাদেশ উভয় নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার ‘বাংলাদেশ-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড রিলেশনস ইন দ্য আফটারম্যাথ অব দ্য কোভিড-১৯ গ্লোবাল পেন্ডামিক’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) কর্তৃক যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ সময় টিপু মুনশি আরও বলেন, বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগী রাষ্ট্র চীন। বাংলাদেশের বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগীও চীন। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, ঢাকায় মেট্রো রেল প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প, ঢাকা-চট্রগ্রাম চার লেন প্রকল্পসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে চীন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি সেক্টরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার শিল্প স্থাপন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে। এ সময় চায়না-বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়ে জয়েন্টলি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইতোমধ্যে উভয় দেশের বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চীন বাংলাদেশের বৃহৎ ব্যবসায়ীক অংশীদার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের গতবছরের বাণিজ্য ছিল ১২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার। এ সময় দেশটিতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে ০ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য এবং আমদানি করেছে ১১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। চীনের দেওয়া বাণিজ্য সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিষয়বস্তুর ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) রিসার্স ডিরেক্টর ড. আব্দুল রাজ্জাক।
গেস্ট অব অনারের বক্তব্য রাখেন— ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান। এছাড়াও বিসিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মর্তুজা, সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট শাহ মো. সুলতান উদ্দীন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা এবং ইআরএফ’র প্রেসিডেন্ট শারমিন রিনভি বক্তব্য রাখেন।
প্রকৌশলনিউজ/এসএআই