বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ তিন পদের তথ্য ইউজিসিকে দেওয়ার নির্দেশ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষদের সংশ্লিষ্ট পদে যোগদান, যোগদান না করা ও পদত্যাগের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ থেকে এমন একটি নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেজিস্টার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ হিসেবে উপাচার্য, উপউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয় সরকার। এসব ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান ও পদত্যাগ-সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয়ে প্রয়োজন হয়। সেজন্য ওসব পদে নিয়োগপত্র জারির পর পরই নিয়োগকৃত ব্যক্তির যোগদান করা অথবা না করা কিংবা পদত্যাগ-সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তাৎক্ষণিকভাবে ই-মেইল ও হার্ড কপি আকারে কমিশনে পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ এই তিনটি পদে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া হয়। মূলত বোর্ড অব ট্রাস্টিজের করা প্রস্তাবনা থেকেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য হিসেবে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু অনেক সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) থেকে ডামি ক্যান্ডিডেটের নাম প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তী সময়ে পছন্দের বাইরে অন্য কাউকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিলে, তখন ওই ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে বিওটি গড়িমসি করে। অনেক সময় বিওটি রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এমন ধরনের কাজ করেছে বলে ইউজিসির নজরে আসে, তাহলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) উপাচার্য নিয়োগের জন্য আচার্য (রাষ্ট্রপতি) বরাবর নাম প্রস্তাব করে। তারপর আচার্য ওই পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। পরবর্তী সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
অভিযোগ রয়েছে, এই আইন অনেকেই মানছে না। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পছন্দের ব্যক্তির নিয়োগ অনুমোদন না হওয়ায় আচার্যের মনোনীত ব্যক্তিকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দিচ্ছে না। পাশাপাশি তারা বছরের পর বছর নিজেদের মনোনীত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছে। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেয়া ব্যক্তিকে যোগদানের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টির অভিযোগও রয়েছে।
সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (আইআইইউসি)। অভিযোগ ওঠে আগের অধিকাংশ সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুন করে বিওটি গঠন করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে আচার্য কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
ইউজিসি সম্প্রতি আরও একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ফার্মেসি-বিষয়ক প্রোগ্রামের অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের পূর্বানুমতি গ্রহণপূর্বক তা প্রোগ্রাম অনুমোদনের আবেদনের সঙ্গে কমিশনে পাঠাতে হবে। এছাড়া নতুন প্রোগ্রাম অনুমোদনের ক্ষেত্রে সিলেবাসের সঙ্গে প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য নিয়োজিত বা নিয়োজিতব্য শিক্ষকের তালিকা প্রেরণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার যথাযথ অনুসরণপূর্বক প্রতি পাতায় শিক্ষকের স্বাক্ষরসহ পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্তসহ অন্য সব তথ্য সংযোজন করতে হবে।