তারকাদের ব্যক্তিগত রসায়ন ভোটযুদ্ধে বদল


প্রকৌশল নিউজ ডেস্ক :
তারকাদের ব্যক্তিগত রসায়ন ভোটযুদ্ধে বদল
  • Font increase
  • Font Decrease

তারকা শিল্পীদের রাজনীতির ময়দানে নামার ঘটনা নতুন নয়। তবে এবারের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস বদলে দিয়েছে। কারণ টলিউডের একঝাঁক তারকা অভিনয়শিল্পীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ। শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে গেছেন তারা। দীর্ঘদিনের সহকর্মী-বন্ধু হয়েও যেন তারা পরস্পরের শত্রু।

যদিও এ কথা মুখে স্বীকার করেন না! কিন্তু বদলে গেছে তাদের ব্যক্তিগত রসায়ন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এমনটাই দাবি করেছে। নায়িকাদের মাঝে বন্ধুত্ব হয় না বহুল প্রচলিত এই কথা ভুল প্রমাণ করেছিলেন টলিউড অভিনেত্রী নুসরাত জাহান, মিমি চক্রবর্তী, শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি, সায়ন্তিকা, তনুশ্রী চক্রবর্তীদের গ্রুপটি। কিন্তু নুসরাত জাহান ও সায়ন্তিকার মধ্যকার বিবাদের প্রভাব পড়েছিল অন্যদের মাঝেও। অনেকটা একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। দাম্পত্য কলহসহ ব্যক্তিগত জীবনের নানা জটিলতার কারণে শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। সেই সংকট এখনো কাটেনি। শুধু তনুশ্রী চক্রবর্তীর সঙ্গে অন্য নায়িকাদের সম্পর্ক সহজ ছিল। সেই পুরোনো বন্ধুরাই এখন রাজনীতির ময়দানে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছেন।

নায়িকারা মুখে যতই বলুন, রাজনীতির প্রভাব ব্যক্তিগত জীবনে পড়বে না, কিন্তু তাই কি হয়! কারণ সায়ন্তিকার হয়ে মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান জনসভা করবেন এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় সব দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। নুসরাত-সায়ন্তিকাকে এখন মঞ্চে দেখা যায় না। বরং মিমি-নুসরাত-সায়ন্তিকা মমতার হয়ে প্রচার করছেন। আর শ্রাবন্তী-তনুশ্রী তৃণমূলকে নিয়ে যা খুশি তাই বলছেন! ক্যারিয়ারে যখন স্ট্রাগল করছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ, তখন তারা পাশাপাশি ছিলেন। তাদের বন্ধুত্বের গল্প টলিপাড়ায় কারো অজানা নয়। তৃণমূলের মঞ্চেও তাদের পাশাপাশি দেখা গেছে। দল বদলের হাওয়ায় যখন সরব পশ্চিমবঙ্গ তখনো ঘরোয়া আড্ডায় তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে। কিন্তু গত দুই মাসে পাল্টে গেছে চেনা সেই দৃশ্য।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে গলা ফাটাচ্ছেন রাজ-রুদ্রনীল। সেই আক্রমণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে নেমে এসেছে। ‘ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখার জন্য রাজকে অনেক কিছুই করতে হচ্ছে।’ এমন মন্তব্য করেন রুদ্রনীল।

পাল্টা বক্তব্যে রাজ বলেন, ‘রুদ্র এতবার বদলেছে যে, ওর বিশ্বাসযোগ্যতা এখন আর নেই।’ অন্যদিকে কমেডিয়ান কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে রুদ্রনীলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক দারুণ ছিল। কিন্তু সেই বন্ধত্বে টান পড়েছে।

রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকা কাঞ্চন ‘শখের রাজনীতি করছেন’এমন মন্তব্য করেছেন রুদ্রনীল। পরমব্রত চ্যাটার্জি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু নাম উল্লেখ না করে রুদ্রনীলের বিরোধিতা করেছেন এই অভিনেতা-নির্মাতা। অভিনেত্রী কৌশানী মুখার্জি, সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, পায়েল সরকার, পার্নো মিত্র, অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত এখন নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত। কিন্তু টলিউডের অন্দরে তাদের জনসংযোগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যশ দাশগুপ্তর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির অন্য তারকার ঘনিষ্ঠতা আছে বলে শোনা যায়নি। তিনি নিজের মতোই থাকেন। কৌশানী মুখার্জি-বনি সেনগুপ্তও নিজেদের জগতে আবদ্ধ থাকেন। একই পরিস্থিতি সায়ন্তিকা ব্যানার্জি ও পার্নো মিত্রর।

নায়িকাদের মধ্যে শুধু মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে পার্নোর বন্ধুত্বের কথা শোনা যায়। শ্রাবন্তীও ইন্ডাস্ট্রিতে মেলামেশা কমিয়ে দিয়েছেন। ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের বক্তব্য সায়ন্তিকাণ্ডকৌশানীকে ফোনে পাওয়া যায় না। নিজেদের গন্ডিতে আবদ্ধ থাকা এসব তারকারা জনপ্রতিনিধি হলে দায়িত্ব কীভাবে পালন করবেন?

 প্রকৌশল নিউজ/এমএস