মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ সেই নারীর মৃত্যু
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া মায়া থ্যা থ্যা খাইং নামের ২০ বছর বয়সী এক নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সেই প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে সেই নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
অং সান সু চির মুক্তি ও সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার সময় সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পড়েন ২০ বছর বয়সী মায়া থ্যা থ্যা খাইং।
ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে মায়াই প্রথম প্রাণ হারালেন।
গুলিতে আহত হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানী নেপিদোতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মায়া। তার মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছিল ৩৪৬টি আসন।
এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। যদিও ইউএসডিপি ৭১টি আসনে জয় পেয়েছে।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। কিছু এলাকায় বলপ্রয়োগ করেছে কর্তৃপক্ষ। গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন দুইজন।
এরই মধ্যে সু চির রিমান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন অভিযোগ এনে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার সামরিক জান্তার পক্ষ থেকে নতুন নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
মিয়ানমারের অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনরাস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে ৫২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৪৪ জনকে।
প্রকৌশল নিউজ/এমআর