একাকী রাণী এলিজাবেথ
নভেল করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আরোপিত কঠোর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। শুক্রবার স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের (৯৯) শেষকৃত্যের সময় উইন্ডসর দুর্গে পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদা হয়ে, মাস্ক পরে একাকী বসে ছিলেন রাণী। আর তার ওই ছবিই যেন শোকার্ত মুহূর্তটিকে আরও শোকাবহ করে তুলেছে। এক প্রতিবেদনে এমনটাই লিখেছে বৃটিশ দৈনিক দ্য ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেইন্ট জর্জ চ্যাপেলে কালো পোশাকে আবৃত হয়ে একাকী, বিষণ্ণ এক মূর্তির প্রতিচ্ছবি হিসেবে আবির্ভূত হন রাণী। কালো মাস্কে ঢাকা ছিল পুরো মুখ। কেবল দৃশ্যমান ছিল তার চোখ দু’টো। সদ্য-প্রয়াত স্বামীর সম্মানে পালন করা এক মিনিটের নীরবতা পালনের সময় মাথা নিচু করে সম্মান জানান তিনি।
সাধারণত শেষকৃত্য ও বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোয় তার ডান পাশের আসনে বসতেন প্রিন্স ফিলিপ। আজ সেই আসন তো বটেই, বা পাশের, সামনের ও পেছনের সারির আসনগুলোও ছিল ফাঁকা। তার সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রু। তিনিও ছিলেন এক হাতের বেশি দূরত্বে। মানবস্পর্শের সান্ত্বনার বাইরে ছিলেন রাণী। তার বিপরীতে বসেছিলেন, প্রিন্স চার্লস ও তার স্ত্রী ডাচেস অব কর্নওয়েল ক্যামিলিয়া।
স্টেট বেন্টলিতে করে ফিলিপের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে পৌঁছান রাণী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ‘লেডি-ইন-ওয়েইটিং’, অর্থাৎ সাবেক বিবিসি চেয়ারম্যান মারমাডিউক হাসির বিধবা স্ত্রী লেডি সুজান হাসি (৮১)।
রাজ পরিবারের সঙ্গে লেডি সুজানের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। তিনি ডিউক অব ক্যামব্রিজ প্রিন্স উইলিয়ামের ‘গডমাদার’। গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই উইন্ডসর দুর্গে রাণী ও প্রিন্স ফিলিপের দেখাশোনার জন্য নির্বাচিত ২০ জন কর্মীর একজন তিনি। এই ২০ জনের টিম এইচএমএস বাবল হিসেবে পরিচিত।
শুক্রবার প্রাসাদ থেকে সেইন্ট জর্জের চ্যাপেল পর্যন্ত রাণীকে সঙ্গ দেন লেডি সুজান। যদিও রাণীর সঙ্গে গির্জায় প্রবেশ করেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, লেডিজ-ইন-ওয়েইটিং হচ্ছেন রাণীর দেখভালের জন্য তার নিজের নির্বাচিত সহযোগী ও গৃহপরিচারিকাদের একটি দল। রাণীর ব্যক্তিগত কাজে সহায়তা, বিভিন্ন সরকারি কাজে যোগদানে সহায়তা, অর্থ দেখভাল করা, রাণীর হয়ে ফুলের তোড়া গ্রহণ করা সহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে থাকেন তারা।
এদের কেউ কেউ গত ৫০ বছর ধরেই রাণীর সেবায় নিয়োজিত। একাধারে রাণীর বন্ধু ও বিশ্বস্ত সহযোগীর ভূমিকা তাদের।