ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত : সবচেয়ে খারাপ দিন দেখল গাজাবাসী
দ্বিতীয় সপ্তাহে পৌঁছেছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত। আর সপ্তাহব্যাপী এই সংঘাতের সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল রোববার (১৬ মে)। এই দিনেই গাজাবাসী দেখেছে সবেচেয়ে নির্মমতা।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার রাতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৪২ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৬ নারী ও ১০ শিশু রয়েছে। যার জন্য এই দিনকে সবচেয়ে মারাত্মক দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন তারা।
আকাশ পথে হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। অন্যদিকে রকেট হামলাও অব্যহত রেখেছে হামাস।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী থেকে জানানো হয়েছে যে, গত এক সপ্তাহে ফিলিস্তিন থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ৩ হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে। আর রোববারে রকেট হামলার পরেই তারা গাজায় হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ডাক এলেও কোনো পক্ষই এখনও যুদ্ধ থামানোর ইঙ্গিত দেয়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এক টুইট বার্তায় উভয়পক্ষকে যুদ্ধ থামাতে বলেছেন। ইসরায়েল, গাজা ও পশ্চিম তীরের মধ্যকার হামলা নিয়ে সৌদি আরব, কাতার ও মিসরের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, সব পক্ষকেই উত্তেজনা হ্রাস করতে হবে। এই সহিংসতা অবিলম্বে শেষ হওয়া উচিত।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই লড়াই না থামলে গোটা অঞ্চলটি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়বে। তিনি অবিলম্বে এই সংঘাত বন্ধের অনুরোধ করেছেন।
সোমবার ভোর থেকেই গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার বিভিন্ন স্থানে ৮০টি বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। এরপরেই ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে রকেট ছোড়ে হামাস।
সংঘাত অব্যাহত থাকলে খুব শিগগিরই ফিলিস্তিন জ্বালানি সংকটে পড়বে বলে আশংকার করেছে জাতিসংঘ। এতে হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে জাতিসংঘের হয়ে কাজ করছেন লিন হাস্টিং। তিনি বিবিসিকে বলেন, আমরা গাজায় জ্বালানি সরবরাহ করার জন্য ইসরায়েলের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা বলেছে এটি অনিরাপদ।
এদিকে পূর্ণ শক্তিতে গাজায় অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি বলেন, আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য যতক্ষণ দরকার ততক্ষণ অভিযান পরিচালনা করব।
সপ্তাহব্যাপী চলা এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৯২ ফিলিস্তিনি মারা গেছে। এর মধ্যে ৫৮ শিশু ও ৩৪ নারী রয়েছে। আর আহত হয়েছে ১২০০ অধিক। পক্ষান্তরে ইসরায়েলে দুই শিশুসহ মারা গেছে ১০ জন।