পাঞ্জশির নিয়ন্ত্রণ নিতে কয়েকশ তালেবান যোদ্ধা, ব্যাপক রক্তপাতের শঙ্কা
রাজধানী কাবুল দখল নিলেও এখনও তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে পাঞ্জশির প্রদেশের পাঞ্জশির উপত্যকা। তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাঞ্জশির উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য তাদের কয়েকশ যোদ্ধাকে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে তালেবানবিরোধী প্রতিরোধ বাহিনী কয়েকটি জেলা পুনর্দখল করেছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।
এর আগে এএফপি এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তালেবানের আরবি ভাষার টুইটার অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, ইসলামি আমিরাতের কয়েকশ মুজাহিদিনি পাঞ্জশির যাচ্ছেন তা নিয়ন্ত্রণে আনতে। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা শান্তিপূর্ণভাবে তালেবানের হাতে নিয়ন্ত্রণ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর শত শত তালেবান যোদ্ধাকে সেখানে পাঠানো হচ্ছে।
আগেরবার যখন তালেবান দেশটি শাসন করেছে, তখনও এটি তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারও গত ২০ বছরে পাঞ্জশিরে ঢুকতে পারেনি। বলতে গেলে দশকের পর দশক পাঞ্জশির উপত্যকা মুক্তাঞ্চল হিসেবে থেকে গেছে। তবে অঞ্চলটির দখল নিতে শত শত তালেবান যোদ্ধাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে পাঞ্জশিরের সিংহ বলে পরিচিত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাহিনী। এতে করে ওই অঞ্চলে ব্যাপক রক্তপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তালেবানবিরোধী আন্দোলনে সাবেক সরকারের কিছু সেনা সদস্যসহ স্থানীয়দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উত্তর কাবুলের পাঞ্জশিরে বিক্ষোভ করে। তালেবানবিরোধী নেতা আহমেদ মাসুদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তালেবান যদি শক্তি প্রয়োগ করে আমরাও প্রস্তুত আছি লড়াই করার জন্য।
আশির দশকে সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধে আফগানিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন আহমেদ শাহ মাসুদ। তারই ছেলে আহমেদ মাসুদ। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন আহমেদ মাসুদ। দেশে ফিরে পিতার প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তানের নেতৃত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন তিনি।
আহমেদ মাসুদের ডাকে সাড়া দিয়ে আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশের হাজারো সদস্য পাঞ্জশিরে জড়ো হচ্ছেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আরও সেনা আসছেন। পাঞ্জশিরে ৯ হাজার সদস্যের প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলেছেন মাসুদ। সেখানে তারা প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাঞ্জশির উপত্যকা একই সঙ্গে তালেবানের হাত থেকে সেনাদের প্রাণ বাঁচানোরও একটি নিরাপদ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
প্রকৌশলনিউজ/সু