সাধারণ হয়েও অসাধারণ গ্লিকের কবিতা


প্রকৌশল নিউজ ডেস্ক:
সাধারণ হয়েও অসাধারণ গ্লিকের কবিতা
  • Font increase
  • Font Decrease

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন মার্কিন কবি লুইজ গ্লিক। যার পুরো নাম লুইজ এলিজাবেথ গ্লিক। ১৯৪২ সালের ২২শে এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটিতে তাঁর জন্ম। তবে তাঁর বেড়ে উঠা নিউইয়র্কের অদূরে, লং আইল্যান্ডে। হাইস্কুলে পড়ার সময়ই গ্লিক অ্যানারেক্সিয়া নার্ভালসা রোগে আক্রান্ত হন। এরোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে তাঁর প্রায় সাত বছর সময় লাগে। কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি শিক্ষকতাও করছেন। 

২০০৩-০৪ সালে গ্লিক ছিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রীয় কবি। হঠাৎ করেই কবি হয়ে ওঠেননি গ্লিক। শৈশবেই কবিতা লেখায় তাঁর হাতেখড়ি। প্রায় ৫০ বছর ধরে কবিতা লিখছেন। কবিতা ও প্রবন্ধ মিলিয়ে বইয়ের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১২টি, ১১টি কবিতার, ১টি প্রবন্ধের। কবিতার জন্য আমেরিকার প্রায় সব প্রধান পুরস্কারই পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পুলিৎজার প্রাইজ, ন্যাশনাল হিউম্যানিটিজ মেডেল, ন্যাশনাল বুক পুরস্কার প্রভৃতি। তাঁর কবিতা বারবার মুগ্ধ করেছে কাব্যমোদী পাঠকদের। অনেকে তাঁকে আত্মজৈবনিক কবিও মনে করেন। গ্লিক তাঁর কবিতার আবেগ পাঠকদের বোধে পৌঁছে দিতে পারেন অবলীলায়। কারণ তাঁর কাব্যভাষা ও ভাবনা স্বতন্ত্র, সরল ও সুনিপুণ।

কবিতা লেখায় ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম মানেন না এই কবি। এমন সময়ও গেছে দীর্ঘ দুবছর কিছুই লিখতে পারেননি তিনি। আবার কখনো চার সপ্তাহেই একটা পুরো কবিতার বই দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। এসব অনিয়মই মূলত তাঁর নিয়ম, গ্লিক এভাবেই লিখে চলেছেন। নিজের কবিতার পাঠক বাড়ানোর প্রতিও কখনো আগ্রহ দেখাননি তিনি। কবিতা পড়া ও আলোচনার জন্য গ্লিক পছন্দ করেন ছোট ধরনের পাঠক সমাবেশ। তিনি তাঁর কবিতার ওপর কাউকেই খবরদারি করতে দিতে চান না।

কবিতায় আবেগ ও ভাবালুতাকে সঙ্গী করে বারবার যেন যাপিত জীবনের তটেই ফিরে আসেন গ্লিক। স্বভাবতই তাঁর কবিতায় ফিরে ফিরে আসে আমাদের নিত্যদিনের চাওয়া-পাওয়া, ছেলেবেলা, হারানো ভালোবাসা, যৌনতা, মৃত্যু, প্রকৃতি ও প্রেম। সমকালীন বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে নতুনভাবে উপস্থিত হয় পুরাণও। সব মিলিয়ে এই কবির কবিতার মধ্যে আছে সাধারণ—খুবই সাধারণ এক সুর। আর এই সুরটি একই সঙ্গে আমাদের চেনা আবার অচেনাও। এসব কারণেই গ্লিকের কবিতা সাধারণ হয়েও ‘অসাধারণ’।

প্র/মির/সুম