রোহিঙ্গাদের ফেরাতে অন্য দেশগুলোর সম্পৃক্ততা চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশে চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সকল দেশের সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন। এ ব্যাপারে চীন আমাদের সহযোগিতা করছে। অন্যান্য দেশও যেন সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করে সেই আশা বাংলাদেশ করছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, চীনসহ অন্য দেশগুলোকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরও সম্পৃক্ত অবস্থায় দেখতে চায় বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, চীন এখানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় রয়েছে এবং তাদের একটি বড় উপস্থিতি আমরা আশা করবো। তবে এটি ঠিক যে শুধু চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে সেটি নয়। আমরা চাইবো, আসিয়ানের আহা সেন্টার এবং ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যদি যুক্ত হয়, তবে রোহিঙ্গারা আত্মবিশ্বাস ফেরত পাবে।
পুরো প্রক্রিয়াটির সঙ্গে চীন জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি তারা কিছু লজিস্টিকের কাজ করছে। এছাড়া জাপান ও ভারতও কিছু করেছে।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘সবকিছু নির্ভর করছে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপরে। আমরা চাইবো বর্ষার আগে প্রত্যাবাসন শুরু হোক।’
প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন সর্বোচ্চ লেভেলে প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছে, সেটি একটি নতুন বিষয়। সুতরাং, আমরা যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা আশা করছি, সেটি এবার ভালো অবস্থায় আছে।’
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সাম্প্রতিক মিয়ানমার সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময়ে রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং যাতে মিয়ানমারের সহযোগিতা পাওয়া যায়, সেটি নিশ্চিত করার বিষয়ও সেখানে নিশ্চয় ছিল। এটা আমার ধারণা। কারণ, চীনেরও একটি ফলাফল দেখানোর দরকার আছে। আমরা যেমন বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা নিয়ে বসে আছি, তেমনি চীন গত দুই বছর ধরে ত্রিপক্ষীয়ভাবে এখানে যুক্ত আছে। সুতরাং, যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয়, তবে চীনের ভাবমূর্তির বিষয়টি সামনে চলে আসবে।
বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন। এ ব্যাপারে চীন আমাদের সহযোগিতা করছে। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ বৈঠক হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পরে তাদের সহায়ক পরিবেশ দেওয়ার দায়িত্ব মিয়ানমারের এবং আমাদের কাজ হচ্ছে রোহিঙ্গাদের খুঁজে বের করা। তারা স্বেচ্ছায় যেতে চায় কিনা, সেটি নির্ধারণ করে ফেরত পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, একবার চলে যাওয়ার পর তখন কিন্তু তাদের বিষয় মিয়ানমারের দায়িত্ব হয়ে যাবে। রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদ থাকে, ঠিকমতো ফেরত যেতে পারে, সেটি মিয়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে।