‘মাঘের শীতে বাঘে কাঁপে’

কথায় আছে ‘মাঘের শীতে বাঘে কাঁপে’। সেই কথার যথার্থতা রেখেই মাঘের শুরু থেকে শেষবারের মতো জেঁকে বসেছে শীত। বসন্তের কাছে মিলিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত এর তীব্রতা থাকবে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ইতোমধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। এবং আগামী কিছুদিন দেশের প্রায় সব জায়গায় মধ্যদুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দুই দফায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। আজ দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। তবে কনকনে শীতের অনুভূতি রয়েছে। আগামী তিনদিন দেশ শৈত্যপ্রবাহ মুক্ত থাকতে পারে বা তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, আজ, আগামীকাল ও পরশু (২৪, ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি) দেশের তাপমাত্রা প্রায় একইরকম থাকবে। এরপর ২৭ জানুয়ারি থেকে আবার তাপমাত্রা কমতে পারে। তখন আবার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।’
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘শীতের এসময় এমন কুয়াশা থাকাই স্বাভাবিক। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকবে। তবে, বেলা বাড়লে রোদের দেখাও মিলবে। রাত থেকে কুয়াশার প্রকোপ বাড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি মিলিয়ে যাবে। আরও কিছুদিন এ আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে। এছাড়া, সারাদেশের তাপমাত্রাই মূলত শুষ্ক থাকবে।’
এদিকে আজ সকাল ৯টা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে ঢাকা ও এর আশপাশের অঞ্চলে বেশ কিছুদিন তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার পর রোববার থেকে বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সেটি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার বেশকিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যায়। এছাড়া, দেশের প্রায় সব অঞ্চল মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের রাইড শেয়ারিং ব্যবসায় ধস নেমেছে। দিনশেষে ২-৪ জন যাত্রীও হচ্ছে না। ফলে চরম অর্থ সংকটে দিন কাটছে নিম্ন আয়ের এসব মানুষের। করোনা মহামারির সময় এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। এ দুঃসময়ের মধ্যেই শীত জেঁকে বসেছে রাইড শেয়ারিং সেবায়।
এদিকে দু’দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চায়ের রাজধানীখ্যাত পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গলে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। মাঘ মাসের শীতের এই দাপটে অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা আবৃত চারপাশ। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে হেডলাইট জালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কিছুটা কমে দেখা দিচ্ছে সূর্যালোক। তবে রোদের তাপ নেই বললেই চলে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, এই কয়েকদিন শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে ঠাণ্ডার প্রকোপ এমনই থাকবে। খুব বেশি কমবে না। তবে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত তীব্র শীত অনুভূত হবে।