দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশমনে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশমনে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দুর্যোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হ্রাস, সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানান বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সহনশীলতা এবং প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারকটি তিন বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। তবে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এর মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এবং বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী নিজ নিজ সরকারের পক্ষে সই করেন।

সম্প্রতি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, বিবেচ্য বিষয়সমূহ- বাংলাদেশ এবং ভারতে সম্ভাব্য দুর্যোগের ঘটনার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি; দুই দেশের জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সক্ষমতা বৃদ্ধি; প্রশমন ও সহনশীলতা সৃষ্ট; স্ব-স্ব অঞ্চলে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সময়ে যেকোনো পক্ষের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রাণ, সাড়াদান ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো; দুর্যোগ সহনশীলতা নিশ্চিতকরণে দুর্যোগ সাড়াদান, পুনরুদ্ধার, প্রশমন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য, রিমোট সেন্সিং ডাটা ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত এবং অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম চর্চাসমূহ বিনিময়; দুর্যোগ প্রস্তুতি, সাড়াদান এবং প্রশমনে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি, আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, রিমোট সেন্সিং, নেভিগেশন পরিষেবা এবং রিয়েল টাইম ডাটা শেয়ারিংয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান; উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক যৌথ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মহড়া পরিচালনা; দুর্যোগ সহনশীল জনগোষ্ঠী গঠনের লক্ষ্যে মানদণ্ড, সর্বশেষ প্রযুক্তি ও টুলস বিনিময়; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রকাশনা এবং উপকরণাদি যেমন পাঠ্যপুস্তুক, নির্দেশিকা বিনিময় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা; এ সমঝোতা স্মারকের আওতাধীন কার্যক্রম পরিচালনায় উভয়পক্ষ একটি করে যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন; বাস্তবায়িত সহযোগিতার অগ্রগতি ও ফলাফল পর্যালোচনার পাশাপাশি সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারণ ও শনাক্তকরণ, সম্মত কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও ত্বরান্বিত করণ এবং সহযোগিতার বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও গ্রহণের জন্য উভয় দেশই সিনিয়র লেভেলে ওয়ার্কিং ভিজিট এবং সভার আয়োজন; উভয়পক্ষ সহযোগিতার একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে এবং এই পরিকল্পনায় সহযোগিতার জন্য সম্মত প্রকল্পসমুহ, সেগুলো বাস্তবায়নের সময়সীমা ও পক্ষগুলোর বাধ্যবাধকতাসমূহ এবং নিজ নিজ দেশে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনায় যেসব সুনির্দিষ্ট বিষয় পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে সেগুলো অন্তর্ভুক্তকরণ।

এ সমঝোতা স্মারকটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতার সম্মত কাঠামো যেমন যৌথ নদী কমিশন, ১৯৯৬ সালের গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সম্পর্কিত সহযোগিতাকে প্রভাবিত করবে না; স্বাক্ষরের পরে এ সমঝোতা স্মারক তথ্য শেয়ারিংয়ে সহযোগিতার বিদ্যমান সম্মত কাঠামোতে কোনোভাবেই প্রভাব ফেলবে না; সংশ্লিষ্ট দেশের নির্ধারিত অনাপত্তি সাপেক্ষে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিদেশিরা সফর করতে পারবেন; এ সমঝোতা স্মারকের আওতাধীন কার্যক্রম বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির (আইপি) সৃষ্টি করলে পক্ষসমূহ পৃথক একটি চুক্তি সম্পাদন করবে।

এ চুক্তি প্রতিটি পক্ষের সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান, উভয়পক্ষের দেশ দু'টি পক্ষ-এ রূপ বহুজাতিক চুক্তির বিধান অনুসারে এ জাতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির মালিকানা, ব্যবস্থাপনা এবং বাণিজ্যিকীকরণের ব্যবস্থা করবে।