করোনা মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারে উন্নত বিশ্বের ভূমিকা জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কভিড-১৯ মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে উন্নত বিশ্ব ও উন্নয়ন অংশীদারদের ভূমিকা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন ।
সোমবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকেপ) তিন দিনের ৭৭তম অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।
এদিন থেকে ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে সংকট থেকে আরও ভালোভাবে উত্তোরণ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যের ওপর এসকেপে ৭৭তম অধিবেশন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে।
অধিবেশনে প্রচারিত ধারণকৃত বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পন্থা, দক্ষ নীতি এবং কৌশল গ্রহনের আহ্বান জানান।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী চার দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
তিনি তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, উন্নত বিশ্ব, উন্নয়ন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএফএস) কোভিড মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসা উচিত।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন পদ্ধতি হওয়া উচিত যে কোনও সংকট থেকে আরও ভালোভাবে উত্তরণের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং পরিবেশ বান্ধব।
শেখ হাসিনা তার তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচিত একটি শক্তিশালী ও সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দক্ষ নীতি ও কৌশল গ্রহণ করা।
চতুর্থ ও চূড়ান্ত প্রস্তাবে তিনি বলেন, বাণিজ্য, পরিবহন, জ্বালানি ও আইসিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সমাধানের জন্য এই বিষয়ে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯ মহামারি সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করেছে।
প্রায় ২ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে এবং প্রতিদিন আরও হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহামারি অনেক মানুষকে আরও দরিদ্র করে তুলেছে এবং আরও অনেকে দারিদ্র্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
কভিড-১৯ মোকাবিলায় তার সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি, চাকরি ধরে রাখা এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের জিডিপির প্রায় ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ বা প্রায় ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বশেষ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কোভিড-১৯ থেকে পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশকে অবাধ ও টেকসই এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত করা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার দিকে গতিপথ নির্ধারণের কৌশল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার পরিবেশ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে অর্থায়নে পরিচালিত কর্মসূচিগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে।
প্রকৌশল নিউজ/এমআর