বিশ্ব মা দিবস আজ
আজ মে মাসের দ্বিতীয় রোববার, বিশ্ব মা দিবস। সারা বিশ্বব্যাপী এই দিনটিতে বিশ্ব মা দিবস পালিত হয়ে থাকে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসার জন্য কোনো আলাদা দিন-ক্ষণের প্রয়োজন না হলেও বিশ্বব্যাপী আজকের দিনটি বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
‘মা’ শব্দটি এক অক্ষের হলেও সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর নাম এটি। সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মায়ের আঁচল। যিনি নিঃস্বার্থে পরম স্নেহ আর ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে আমৃত্যু আগলে রাখেন, তিনিই মা।
প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের এক নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন। ১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের অনেক নজির রয়েছে পৃথিবীতে। মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা স্থান পেয়েছে কবিতায়, গানে, শব্দে-উপমায়। রচিত হয়েছে বিশ্বখ্যাত উপন্যাস। মায়ের সঙ্গে দেশের প্রতি ভালোবাসা তুলনা করে রাশিয়ান কবি ম্যাক্সিম গোর্কি একটি উপন্যাস লিখেছিলেন। মা নামের ওই উপন্যাসটি সে সময়ে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল।
অতীতের মতো এখনও কেক কেটে সারা পৃথিবীতে মা দিবস উদযাপন হচ্ছে। সেইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মায়ের ছবি দিয়ে কিংবা মাকে নিয়ে কিছু লিখে অনুভূতি প্রকাশ করা হয়।
কোরআন, পুরান থেকে কিংবা মাকে নিয়ে পৃথিবীজুড়ে লেখা লাখ লাখ কবিতার অংশবিশেষ উল্লেখ করেও মা দিবসে ফেসবুকে পোস্ট দেন অনেকে।
মাকে মধ্যমণি করে থাকে সামাজিক ও পারিবারিক আড্ডা। কিন্তু কোভিড-১৯-এর প্রকোপ হয়তো এবার আর মাকে ঘিরে আড্ডার সুযোগ দেবে না।
পৃথিবী নানান মত ও পথে বিভাজিত হয়ে গেছে। অনেক সম্পর্ক ম্লান হয়ে গেছে। কিন্তু ‘মা’ শব্দটি এক অন্তহীন ভালোলাগায় মানুষের মধ্যে মিশে আছে আজও। মধুরতম এই শব্দ উচ্চারিত হলেই যেন থেমে যায় মানুষ। শ্রদ্ধায় নত হয়ে আসে শির ও শরীর।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় মানুষ অবিরত গবেষণার অনেক দূর চলে গেছে; দূরাকাশে, গভীর থেকে গভীরে। কিন্তু মা শব্দটির গভীরতা মাপার দুঃসাহস না করেই বরং অনাবিল সুখের আবেশে ভেসে বেড়াচ্ছে মানুষ। আর মা তো মা-ই। হোক কর্মজীবী কিংবা গৃহিণী। সন্তানকে অদৃশ্য এক বাঁধনে বেঁধে তিনি নিজেকে নিরন্তর পুড়িয়ে আনন্দ কুড়াচ্ছেন।