মুক্তি পেলেন সাংবাদিক রোজিনা


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
মুক্তি পেলেন সাংবাদিক রোজিনা
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম জামিনে কারা মুক্ত হলেন। মুক্তি পেয়ে বলেছেন, তিনি সাংবাদিকতা চালিয়ে যাবেন। 

রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহর আদালত রোজিনা ইসলামকে ৫ হাজার টাকা জামানত ও পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে জামিন দেয়। এসময় তার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছালে সেখানের প্রক্রিয়া শেষে আজকের মধ্যেই তিনি মুক্তি পেতে পারেন। এ উপলক্ষে, কারা ফটকে গাজিপুরের স্থানীয় ও ঢাকা থেকে যাওয়া সাংবাদিকরা অপেক্ষা করছিলেন।

মুক্তি পাওয়ার পর রোজিনা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাংবাদিকতা চালিয়ে যাবো। সাংবাদিকসহ যারা পাশে ছিলেন, সবাইকে ধন্যবাদ।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ'র আদালতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে, রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আজ আদেশের দিন ধার্য করেন আদালত।

আজ সকালে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করলে আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, 'আদালতে আমরা জামিন চাইলে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্ত দেয় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। আমরা তা মেনে নিলে রোজিনা ইসলামের জামিন দেন আদালত।'

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, 'আসামিপক্ষ রোজিনা ইসলামের জামিন চাইলে, আমরা আদালতকে বলি, তিনি যদি পাসপোর্ট জমা দেন, তবে জামিনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। পরে রোজিনার পক্ষের আইনজীবীরা বিষয়টি মেনে নিলে আদালত তার জামিন দেন।'

জামিন আদেশের আগে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, 'গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম অনুষঙ্গ। গণমাধ্যমের কারণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দায়িত্বশীল আচরণ করে থাকে। কোর্ট ও গণমাধ্যম একে অপরের বাধা হিসেবে নয়, পরিপূরক হয়ে কাজ করে।’

জামিন আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে রোজিনা ইসলামের স্বামী মনিরুল ইসলাম মিঠু সাংবাদিকদের বলেন, 'এই রায়ের জন্য সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশের সব সাংবাদিক ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাদের প্রতি, যারা গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে আন্দোলন করেছেন। সর্বশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই আইনজীবীদের প্রতি। তাদের আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও অনেক ধন্যবাদ জানাই।'

প্রসঙ্গত, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গত সোমবার (১৭ মে) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে অবস্থিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে নথি 'চুরি'র অভিযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পাঁচ ঘন্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। পরে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। ওই দিনই অফিস সিক্রেট আইন ও দণ্ডবিধিতে মামলা করা হয়। তার পর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন।

প্রকৌশলনিউজ/এমএসআই/সু