সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ ও গাড়ি কেনায় মানা
করোনাভাইরাসের কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বৈঠক-সম্মেলন, সেমিনার বা প্রশিক্ষণ বন্ধ। সেইসাথে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, তথা বিমান চলাচল আজ সীমিত পরিসরে চলছে, কাল আবার বন্ধ। এ কারণে বিদেশ ভ্রমণ বাবদ সরকারি কর্মচারীদের পেছনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ খরচ কমেছে। পাশাপাশি মন্ত্রী, সাংসদদেরও বিদেশ ভ্রমণে লাগাম টানা হবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের ভ্রমণ ও গাড়ি কেনায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কৃচ্ছ্রসাধন করতে চায়। এ জন্য সিংশিষ্ট বিভাগটি ১ জুলাই দুটি আলাদা পরিপত্র জারি করেছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে ভ্রমণ ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। শুধু অগ্রাধিকার খাতগুলোতে অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, সরকারিভাবে ভ্রমণের জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে, তা থেকে ৫০ শতাংশ বরাদ্দ স্থগিত থাকবে। শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্রে ভ্রমণ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ করা অর্থ খরচ করা যাবে। সব ধরনের নিয়মিত ভ্রমণও পরিহার করতে হবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।
সেখানে আরো বলা হয়েছে, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিপত্রটি প্রযোজ্য হবে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদ্যবিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের খরচ মেটানোর জন্য সরকার যে বরাদ্দ রেখেছিল, করোনার কারণে এর পুরোটা খরচ হয়নি। সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী, বিদেশ ভ্রমণে গেলে দেশওয়ারি জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, সচিব, সাংসদ ও বাংলাদেশি মিশনগুলোয় কর্মরত রাষ্ট্রদূতেরা হোটেল খরচ হিসেবে দৈনিক ২৩০ থেকে ৫৬০ ডলার পর্যন্ত ভাতা পান। এ ছাড়া খাবার, বকশিশ ও যাতায়াতের জন্যও গড়ে দিনে ১০০ ডলার পর্যন্ত ভাতা পান তাঁরা। করোনাভাইরাস আসার পর থেকে কেউ এ টাকা খরচ করতে পারেননি।
যানবাহন ক্রয়সংক্রান্ত অন্য পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় যানবাহন কেনা বাবদ যে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে, তা থেকেও খরচ করা যাবে ৫০ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন কেনাকাটা খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৯ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গাড়ি কেনা বাবদ চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা স্থগিত থাকছে। অর্থাৎ, এ টাকা খরচ করা যাবে না।
এরআগে, পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের ওপর তৈরি এক প্রতিবেদনেও বিদেশ ভ্রমণের জন্য বরাদ্দের বিষয়টি আলোচিত হয়।