রূপগঞ্জে ৫২জনের মৃত্যু, আট জন গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন কারখানাটির মালিক সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম, গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহেনশাহ আজাদ। মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম।
দুপুরে রূপগঞ্জ থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়। এতে আসামি করা হয়, সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেন, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনকে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৮ জনকে আটকের কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এ ঘটনার জন্য কারও ন্যূনতম অবহেলা পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আহত ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে এবং হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভবন নির্মাণে ন্যূনতম ক্রুটি এবং শ্রমিক পরিচালনায় কোনো গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ও মর্মান্তিক। যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত করছি এবং আশা করছি যারা অসুস্থ তারা ফিরে আসবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্তের পরই বলা যাবে কার দোষ কতটুকু। কিন্তু তদন্তে কারো নির্মাণ ত্রুটি, শ্রমিক পরিচালনায় ত্রুটি বা কেউ যদি সামান্য ভুলও করে থাকেন তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময় শিশুশ্রম নিয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্তে সেটি বেরিয়ে আসলে অবশ্যই বিচার হবে।
শ্রমিকরা ছাদে তালাবদ্ধ ছিল এমন অভিযোগ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, তদন্তে সামান্যতম ত্রুটি বা গাফিলতি যদি পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে কারখানার মালিক বর্তমানে কোথায় রয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করেছি। সবাই নজরদারিতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ২৯ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে গেছে ৫২টি প্রাণ। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।