'দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন' মনিটরিং জরুরি


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
'দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন' মনিটরিং জরুরি
  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবের এই সময়ে বেশি হুমকির মুখে পিছিয়ে পড়া মানুষ, একদিকে তাদের খাদ্যে সংগ্রহে ছুটতে হয় সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনার সংগ্রাম। এই পরিস্থিতিতে আমাদের খেয়াল করা উচিত লকডাউন বা বিধি-নিষেধ যেটাই হোক না কেন কোনো প্রকার বৈষম্য যেন না হয়। সরকারের পক্ষ থেকে অথবা অন্যকোন ভাবে যে সকল প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে তা বিতরণের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় সেটা মনিটরিং করতে হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত ধারাবাহিক আলোচনার পঞ্চম ধাপে ‘মহামারীকালে মানবাধিকার : সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায় শনিবার (৩১ জুলাই) বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক। এতে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন ড. রহমত উল্লাহ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। বিলিয়ার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বৈশ্বিক মহামারীর এই সময়ে পিছিয়ে পড়া জনগণ সব চেয়ে বেশি হুমকির মুখে। আমাদের খেয়াল করা উচিত লকডাউন বা বিধি-নিষেধ যেটাই হোক না কেন তা বাস্তবায়নে কোন প্রকার বৈষম্য যেন না হয় তা কর্তৃপক্ষকে সার্বক্ষণিক খতিয়ে দেখা দরকার। মহামারীর এই সময়ে দেশে ১১ হাজার নতুন কোটিপতি হয়েছেন। সংকটের এই সময়ে তাদের অবদান কতোটুকু সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলকে ভ্যাকসিন দেয়ার পাশাপাশি নিজ নিজ স্থান থেকে সচেতন হতে হবে।

ড. রহমত উল্লাহ বলেন, মহামারীর এই সময়ে যারা বেকার হচ্ছেন বা কাজ হারাচ্ছেন তাদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা। সরকারের প থেকে অথবা অন্যকোন ভাবে প্রণোদনা বা কর্মস্থল সৃষ্টি করতে না পারলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হচ্ছে সেটি শুধুমাত্র একশ্রেণীর লোকেরাই পাচ্ছেন এতে করে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। খেয়াল রাখা দরকার এই সুবিধা যেন সব স্তরের মানুষকে দেয়া সম্ভব হয়। করোনাভাইরাস আরো অনেক দিন বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই সেজন্য সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এই অবস্থায় কোন পরিকল্পনা এখনো নেয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত শিক্ষা নিয়ে মাঝে মধ্যে যে ধরনের বক্তব্য দেয়া হচ্ছে তাতে শুধুমাত্র বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা বিশ্বে এখন ভ্যাকসিনের রাজনীতি চলছে। এই রাজনীতির গণ্ডি থেকে বের হয়ে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তার পথ আমাদের খুঁজতে হবে।

তানিয়া আমীর বলেন, করোনার এই সময়ে করণীয় কি তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঠিক করে দিলেন। কিন্তু তা কতটা কার্যকর হয়েছে তার কোনো তদারকি চোখে পড়ে না। বরং তারা টিকা নেওয়ার বিষয়ে বেশি তৎপরতা দেখাচ্ছেন। কয়েকটি বড় কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের টিকার অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমন আচরণকে নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত কিনা তা ভাববার বিষয়। করোনা মোকাবেলায় আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থা কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বরং নিজস্ব ব্যবস্থায় কিছু করতে পারলে দেশের সাধারন জনগণের জন্য সহজলভ্য হতো।