দ্বীপ রাষ্ট্র মরিশাসে বঙ্গবন্ধুর নামে সড়ক
দেশের গন্ডি পেরিয়ে অনেক আগেই আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পৌছে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বের বহু দেশে জাতির পিতার নামে অনেক সড়কের নামকরন করা হয়েছে আগেই। এবার সেই কাতারে যুক্ত হয়েছে স্বর্গীয় দ্বীপ হিসেবে খ্যাত মরিশাস।
মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে’র একটি সড়ক বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র নামে নামকরণ করা হয়েছে।
নামকরণ করা উপলক্ষ্যে এক ভিডিও বার্তায় মরিশাসের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো গভীর করার প্রত্যয় নিয়ে একসাথে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমরা একসাথে চলার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে এবং দেশ দু’টির মূল্যবোধ, আদর্শ ও লক্ষ্য অভিন্ন। দু’টি দেশই তাদের জনগণের কল্যাণ ও আকাঙ্খাকে প্রাধান্য দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে একে অপরকে সমর্থন দেই। আমি বিশ্বাস করি, আগামী বছর ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করার পর বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে দু’দেশের মধ্যকার সহযোগিতা ও সমঝোতার সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কাজ করবে।’
স্বর্গীয় দ্বীপ মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসের একটি সড়ক সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে জানতে পেরে তিনি খুব খুশি হয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে মরিশাস সরকার ও এর বন্ধুপ্রতিম জনগণ এবং যারা কোভিড-১৯ মহামারী উপেক্ষা করে সাহসিকতার সাথে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজটি করেছেন তাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সড়কটি দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক। আর এটি হচ্ছে মরিশাসে বসবাসরত বাংলাদেশীদের জন্য একটি অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত।
এই শুভক্ষণে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ত্রিশ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ নারী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসমাটিক নেতৃত্বে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে।’
চলতি ২০২০ সাল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সমগ্র জাতি এ বছর দেশে ও বিদেশে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে উদযাপন করছে। ।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর এখন আমরা অক্লান্তভাবে কঠোর পরিশ্রম করে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
‘আমরা আমাদের ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছি। আর এভাবেই একদিন আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলে তাঁর স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হব।’
প্রধানমন্ত্রী ‘ব্লু -ইকোনোমি’ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশে সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘এক্ষেত্রে মরিশাসের যে ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে, আমরা তা থেকে উপকৃত হতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও মরিশাস উভয় দেশের জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।