১০০ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গত দুই বছরে ৪৫০টি পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন থাকার পরও এক কপিও বের করেনি এর মধ্যে ১০০ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘সাংবাদিকতায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাংবাদিক সমাজের জন্য যা কিছু করেছেন, তা অতীতে কেউ করেননি। পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে যদি আমরা তুলনা করি, সেই তথ্যে আমরা দেখতে পাই, আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিকদের জন্য যে ব্যবস্থাগুলো ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে, আশেপাশের দেশে তা করা হয়নি। যারা বড় বড় কথা বলেন এবং দলাদলি করেন, তারা কিন্তু এই কাজগুলো করেননি। গণমাধ্যমের বিকাশের জন্য প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কাজ করেছেন সেটি অন্য কোনও সরকার করেনি। আজকে ৩৭টির মতো টেলিভিশন চ্যানেল, দুই একটি আরও অন এয়ারে আসবে খুব শিগগিরই। এতোগুলো প্রাইভেট চ্যানেলের কারণে কিন্তু অনেকগুলো কর্মসংস্থান হয়েছে। এই যে এত মেধাবী শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকতায় লেখাপড়া করে বের হচ্ছে, এই প্রাইভেট চ্যানেলগুলো না থাকলে তারা কোথায় চাকরি করতো। একইসঙ্গে পত্রপত্রিকার সংখ্যা ৪৫০ ছিল, সেখান থেকে এক হাজার ২৫০ হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনলাইন গণমাধ্যম।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেসব পত্রিকা ডিক্লেয়ারেশন নিয়ে সেই অনুযায়ী চলে না বা পত্রিকা বের করে না, সেগুলোর ডিক্লেয়ারেশন রাখার যৌক্তিকতা কী? আমি খোঁজ নিয়েছি ৪৫০ পত্রিকা গত দুই বছরে একটি কপিও বের করেনি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এই পত্রিকাগুলো করে কী? তারা বিভিন্ন সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয়, একটা কার্ড দেয় এবং তাদের কোনও বেতন দেয় না। এগুলো হচ্ছে “ভুতুড়ে পত্রিকা”। এসব পত্রিকায় যারা কাজ করে তারা বেতন পায় না, ফলে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়, নানা কিছুর সঙ্গে যুক্ত হয়। আর সেই বদনাম সাংবাদিক সমাজের ওপর পড়ে। এ জন্য এসব ভুতুড়ে পত্রিকার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ১০০টি ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করার জন্য বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কাছে নাম পাঠানো হয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কারণ তারা বিজ্ঞাপনে ভাগ বসায়, যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন এক কপি ছাপায়।’
অনলাইন গণমাধ্যম প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘এটি আজকের যুগের বাস্তবতা। এটি মেনে নিতে হবে। আমরা যথেচ্ছভাবে অনলাইনের রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছি না। এখন পর্যন্ত পত্রিকার অনলাইন সংস্করণসহ এখনও ১৫০ অতিক্রম করেনি রেজিস্ট্রেশন দেওয়া, আবেদন ৫ হাজারের বেশি। আমরা খুব ভেবে চিন্তা, তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দিয়েছি।’
আইপি টিভির জন্য ৬০০ আবেদন পড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আইপি টিভি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। হাইকোর্টেও একটা নির্দেশনা আছে। আইপি টিভির ক্ষেত্রেও আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে দেখছি। এই দেশে কি শত শত আইপি টিভির প্রয়োজন আছে? আমি তো মনে করি এভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো আইপি টিভি হচ্ছে। আমরা নীতিমালা করছি, আইপি টিভি কোনও সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। যখন সংবাদ প্রচার করতে পারবে না তখন অনেক আইপি টিভি নিজেরাই বন্ধ করে দেবে। আমরা ধীরে ধীরে রেজিস্ট্রেশন দেবো, এখনও কাউকে দেওয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশনের পাশাপাশি ব্যবস্থা গ্রহণের কাজটিও করবো।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বর্তমান সভাপতি মুরসালিন নোমানী এবং সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান প্রমুখ।