দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, ছাড় নেই: প্রধানমন্ত্রী


প্রকৌশল নিউজ:
দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, ছাড় নেই: প্রধানমন্ত্রী
  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, যত শক্তিশালীই হোক কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে আবারও সর্তক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের দুই বছর পূর্তি ও তৃতীয় বছরে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের পথে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমরা বদ্ধপরিকর।  কিছু অসাধু মানুষ নানা কৌশলে জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।  আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।  দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং হবে না।

দুর্নীতি নির্মূলে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

সরকার প্রধান বলেন, আইনের শাসন সমুন্নত রেখে মানুষের নাগরিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন আমরা তা করবো।

জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের যে মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে ধাবিত হচ্ছে তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হতে না পারে সেদিকে আপনাদের সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থান প্রতিহত করেছি।

সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে সহনশীলনতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সবি ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। গত একযুগে আমরা জনগণের জন্য কী করেছি, তা মূল্যায়নের ভার আপনাদের।

আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের তৃতীয় বছর শুরু করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এবং বৈশ্বিক মহামারির অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। দুই বছর আগে আজকের এই দিনে তৃতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনার যে গুরুদায়িত্ব আপনারা আমার উপর অর্পণ করেছিলেন, সেটিকে পবিত্র আমানত হিসেবে গ্রহণ করে আমরা সরকার পরিচালনার তৃতীয় বছর শুরু করতে যাচ্ছি।

দেশ গড়ার কাজে সবাইকে সততার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালনের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ থেকে উদ্বৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের চেয়েও দেশ গড়া বেশ কঠিন। দেশ গড়ার সংগ্রামে আরও বেশি আত্মত্যাগ, আরও বেশি ধৈর্য, আরও বেশি পরিশ্রম দরকার। আমরা যদি একটু কষ্ট করি, একটু বেশি পরিশ্রম করি, সবাই সৎপথে থেকে সাধ্যমতো নিজের দায়িত্ব পালন করি, সবচেয়ে বড় কথা, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি- তাহলে আমি বিনা দ্বিধায় বলতে পারি ইনশাআল্লাহ কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা আবার সোনার বাংলায় পরিণত হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আজ অনেকদূর এগিয়েছি সত্য।  আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে। হতে পারে সে গন্তব্য পথ মসৃণ, হতে পারে বন্ধুর।  বাঙালি বীরের জাতি।  পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।  আমরা যদি পরিশ্রম করি, সততা-দেশপ্রেম নিয়ে দায়িত্ব পালন করি, তাহলে আমরা সফলকাম হবোই, ইনশাআল্লাহ।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে আসুন আমরা নতুন করে শপথ নেই- মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে ধারণ করে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ।  এরপর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড আর কারও নেই।