করোনা ও সরকারকে ‘দানব’ বললেন ফখরুল
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়ে সরকার সাংবাদিকদের শিক্ষা দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘রোজিনাকে কারাগারে প্রেরণ করে সরকার সব সাংবাদিকদের শিক্ষা দিতে চায় যে, বেশি লাফালাফি করা যাবে না। এই দানব সরাতে হবে, দেশকে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এখন দেশের আমলারাও সরকারি দলের নেতা। তারা প্রকাশ্যেই দেশ চালানোর কথা বলেন, রাজনীতি করেন। আর আওয়ামী লীগ সরকারই এই অবস্থা তৈরি করার জন্য দায়ী। তারা আইন, বিচার, শাসন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য- সব খাত ধ্বংস করেছে।’
প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রোজিনাকে ধন্যবাদ। কারণ তিনি সাহস নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের দুর্নীতি তুলে ধরেছেন। এ জন্যই রোজিনার প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের এত ক্ষোভ।’
বৃহস্পতিবার রোজিনা ইসলামকে জামিন না দেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে জামিন দিতে দেরি করা হচ্ছে। এই বিচার বিভাগের ওপর আস্থা রাখতে হবে? আওয়ামী লীগ সরকারের কালচারটাই হলো শুধু মামলা করো।’
অন্যায়কে অন্যায় বলতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালানোর মাধ্যমে মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) মৃত্যু, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীর গ্রেপ্তারেরও।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, যতই বন্দী রাখা ও গুম হত্যার মাধ্যমে নির্যাতন করা হোক না কেন, এই সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে এখন দুইটা দানব আছে- করোনাভাইরাস ও আওয়ামী লীগ সরকার। ‘এই দুইটা মিলে দেশকে ধ্বংস করছে। আওয়ামী লীগ দানব দেশের ৫০ বছরের অর্জন লন্ডভন্ড ও ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। যে কারণে স্বাধীনতার পরেই বাকশাল কায়েম করার মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্রের জন্য, যে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেটা ধ্বংস করে বাকশাল গঠন করেছিল।’
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।