ব্যাট-বলের সেই ঠক ঠক শব্দ বন্ধে আসছে বাঁশ
ভদ্র লোকের খেলা ক্রিকেট। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই খেলার শুরু থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছিল উইলো কাঠের তৈরি ব্যাট। যে ব্যাট দিয়ে খেলে সুপারস্টার বনে গেছেন স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান থেকে শচীন টেন্ডুলকার হয়ে আজকের সাকিব আল হাসান আর বিরাট কোহলিরা। ঐতিহাসিক সেই উইলো কাঠের ব্যাট বদলে যাচ্ছে। তার পরিবর্তে আসছে বাঁশের ব্যাট।
ফলে ব্যাট-বলের সেই হৃদয় কাঁপানো ঠক ঠক শব্দ আর বেশি দিন শুনতে পাওয়া যাবে না। ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তৈরি করেছেন বাঁশের ব্যাট। এই ব্যাট বর্তমান উইলো কাঠের তৈরি ব্যাটের চেয়ে অধিক মজবুত, দামেও সস্তা এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না বলেছেন গবেষকরা। তাছাড়া বাঁশের ব্যাটের ‘সুইট স্পট’ অর্থাৎ ব্যাটের মধ্যভাগ বলের সঙ্গে সংযোগের জায়গাও অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন তারা। এ বিষয়ে কেমব্রিজের সেন্টার ফর ন্যাচারাল মেটেরিয়াল ইনোভেশনের গবেষক ড. ডার্শিল শাহ বলেছেন, এই বাঁশের ব্যাট ব্যাটসম্যানদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবে। বাঁশের ব্যাটের সুইট স্পট দিয়ে ইয়র্কার বল থেকে চার মারা কোনো ব্যাপারই না।
সব ধরনের স্ট্রোকেই এই ব্যাট কাজে দেবে। উইলো ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগের পর ব্যাটসম্যান যে কম্পন অনুভব করেন, বাঁশের ব্যাটের ক্ষেত্রে এর কোনো হেরফের হবে না বলে জানিয়েছেন তারা। গবেষকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটের জন্য ব্যবহৃত ভালো মানের উইলো কাঠ ক্রমেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে। উইলো গাছ বড় হতে কমপক্ষে ১৫ বছর সময় লাগে।
সেই তুলনায় ‘মেসো’ জাতের বাঁশ পাকতে সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় বছর। এই মেসো বাঁশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায় প্রচুর জন্মে। এদিকে লন্ডনের মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) দীর্ঘদিন ধরেই ঐতিহ্যগতভাবে ক্রিকেট খেলার নিয়মকানুন তৈরি করে থাকে। তারাই ব্যাটের গঠন ও আকৃতি নির্ধারণ করে আসছে।
সেই অনুযায়ী ক্রিকেট ব্যাটের ব্লেড তৈরি হয় শুধুমাত্র কাঠ দিয়ে। সেই ব্যাটে বাঁশের ব্যবহার সম্পর্কে ক্লাবটির কোনো মন্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।