ঈদযাত্রায় প্রাণ হারিয়েছেন ২০৭ জন
ঈদযাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়ক ও নৌপথে ১১ দিনে ১৫৮টি দুর্ঘটনায় ২০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৮৯ জন। ১১ থেকে ২৪ জুলাই ঈদুল আজহার আগে-পরে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ১১ দিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। ৭৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৭ জন। এই সময়ে চার নৌ দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, দুইটি রেলপথ দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদন আরও বলা হয়, দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে রয়েছেন- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ৮৭ জন, বাসযাত্রী ১২ জন, ট্রাক-পিকআপযাত্রী আটজন, মাইক্রোবাস-প্রইভেটকারযাত্রী ১৩ জন, থ্রি-হুইলারযাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা) ৩১ জন, নসিমন-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়িযাত্রী ১০, বাইসাইকেল আরোহী তিনজন।
পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৫৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ৬৬টি আঞ্চলিক সড়কে, ১৪টি গ্রামীণ সড়কে এবং ১৯টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২০ সালে ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৪ দিনে ১৮৭টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত হয়েছিলেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ অনুযায়ী ঈদুল আজহায় সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে সিলেট বিভাগে।
ঢাকা বিভাগে ৩৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮ জন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে ৪টি দুর্ঘটনায় নিহত চারজন। একক জেলা হিসেবে রংপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৫টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। এখানে একটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।
রোড সেইফটি ফাউন্ডেশন জানায়, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা এবং মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়াভাবে চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতাকে দায়ী করা হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তথ্যমতে সড়ক দুর্ঘটনার এই প্রতিবেদনটি তৈরি ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়।