মামুনুলের ‘তৃতীয় বিয়ের’ সন্ধান, বোনের খোঁজে ভাইয়ের জিডি


প্রকৌশল প্রতিবেদক:
মামুনুলের ‘তৃতীয় বিয়ের’ সন্ধান, বোনের খোঁজে ভাইয়ের জিডি
  • Font increase
  • Font Decrease

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই তৃতীয় বিয়ের খবর বের হয়েছে। মো. শাহজাহান নামের এক ব্যক্তি তার বড়বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপির স্বামী দাবি করছেন মামুনুল হককে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন শাহজাহান।

জিডিতে শাহজাহান উল্লেখ করেন, ‘১০ এপ্রিল (শনিবার) আল্লামা মামুনুল হক আমাকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় ডেকে জানায়, আমার বোন জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে।’

ওই সময় মামুনুল একটি চুক্তিনামা দেখান বলেও সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেছেন শাহজাহান। তবে তার বোনের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ এখনও হয়নি বলেও জিডিতে লিখেছেন তিনি।

তার বোনকে বর্তমানে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে শাহজাহান আরও লেখেন, ‘আমার বোনকে নিরাপত্তা প্রদান ও অভিভাবকের কাছে হস্তান্তরের জন্য আইনগত সহায়তা কামনা করছি।’

জিডিতে শাহজাহান জানান, তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বানারহাওরা এলাকায়। গত ৭ এপ্রিল তার বড় বোন জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। ওই সময় লিপি তার ভাই শাহজাহানকে জানান, তিনি ওই সময় মোহাম্মদপুরে দিলরুবা নামে এক নারীর বাসায় অবস্থান করছেন। দিলরুবা মামুনুল হকের বোনের নাম।

রোববার সন্ধ্যায় এই সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ। তিনি বলেন, ‘জিডি হওয়ায় আদালতের নির্দেশে আমরা তদন্ত করবো।’

এর আগে গত শনিবার (১০ এপ্রিল) রাতে পল্টন থানায় নিজের ও মায়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পল্টন থানায় মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ওরফে ঝর্নার ছেলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এই ঝর্নাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে গিয়েছিলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক।

জিডিতে ওই নারীর ছেলে বলেছেন, গত ৩ এপ্রিল থেকে মায়ের খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত।

পল্টন থানার ওসি আবু বকর বলেন, জিডিতে তার ছেলে বলেছেন তার মা গত ৩ এপ্রিল ধানমণ্ডির নর্থ সার্কুলার রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পর থেকে তার খোঁজ আর পাচ্ছেন না তিনি।

হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাংচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

তবে ঘেরাও থাকা অবস্থায় এই হেফাজত নেতা জানান, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তিনি শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করেছেন। কিন্তু ঘটনার রাতে কয়েকটি ফোনালাপ রেকর্ড ফাঁস হয়। সেখানে শোনা যায়, দ্বিতীয় বিয়ে করার বিষয়টি মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রী জানতেন না। এছাড়া তিনি রিসোর্টে স্ত্রীর নাম সঠিক বলেননি।

এ ঘটনার পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, ‘আমি একাধিক বিয়ে করেছি। শরিয়তে একজন মুসলিম পুরুষকে চার চারটি বিয়ে করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। দেশি আইনেও চার বিয়ে করায় কোনো নিষেধাজ্ঞা বা কোনো অনুৎসাহ নেই। কাজেই আমি যদি চারটি বিবাহ করি, তাতে কার কী?’

মামুনুল বিয়ের দাবি করলেও তার স্ত্রী যে এগুলো জানতেন না, সেটি এখন স্পষ্ট। আর স্ত্রীর কাছে লুকানোর বিষয়ে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ‘ইসলামি শরিয়তের মধ্যেও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে যে, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য, স্ত্রীকে খুশি করবার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সীমিত ক্ষেত্রে সত্যকে গোপন করারও অবকাশ রয়েছে।’


প্রকৌশল নিউজ/এমএস