বর্বরোচিত মারধরের ভিডিও দেখে পুলিশের তড়িৎ ব্যবস্থা
কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও থানাধীন কালিরছড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে মঞ্জুর আলম (৪৫) দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়েছেন। প্রবাস জীবনে যা আয় করেছেন তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা আক্তারের নামে পাঠাতেন। সে টাকা দিয়ে তাঁর স্ত্রী নিজের নামে কিনেছেন জমি। আর সেখানে বানিয়েছেন বহুতল ভবনও।
সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কারণে ছুটিতে আসার পর আর বিদেশ যাওয়া হয়নি মঞ্জুর আলমের। এরই মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মাঝে দেখা দেয় পারিবারিক কলহ। স্বামীর সাথে দুরুত্ব বাড়াতে থাকে স্ত্রী রুনার। এক পর্যায়ে গত শুক্রবার মঞ্জুর আলম তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা আক্তারের বাড়ি গেলে সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রুনার বাবা, মা, ভাই বোনসহ সবাই মঞ্জুর আলমের প্রতি মারমুখী হয়ে উঠে।
তারা সবাই মিলে মঞ্জুর আলমকে এলোপাতারি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। মারতে মারতে তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে মারের এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। তারা তাকে মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থাতেই তার অচেতন শরীরে লাঠি দিয়ে নির্দয়ভাবে পেটাতে থাকে।
এসময় একজন প্রত্যক্ষদর্শী উক্ত বর্বরোচিত ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। তারপর সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন। সেখান থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে হাজার একাউন্টে। এভাবে এক পর্যায়ে ভিডিওটি কক্সবাজার জেলা পুলিশের নজরে আসে। তৎক্ষণাৎ দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চলে যায় ঈদগাঁও থানায়।
নির্দেশনা পাবার সাথে সাথে ঈদগাঁও থানার একট টিম ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। সেখানে গিয়ে তারা ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং ভিকটিমের স্ত্রীসহ উক্ত ঘটনার সাথে জড়িৎ সকলকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে মুমূর্ষ অবস্থায় দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরবর্তিতে অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু তাকে চট্রগ্রাম নেয়ার পথে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় সেদিন রাতেই ঈদগাঁও থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যে মামলার ৯ জন আসামির মধ্যে ৮ জন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস