পুলিশকে কেন ফেরেশতা বললো তরুণী?


প্রকৌশল প্রতিবেদক:
পুলিশকে কেন ফেরেশতা বললো তরুণী?
  • Font increase
  • Font Decrease

গত রাতেই সুইসাইড নোট লিখেছিলাম, হয়ত রাতেই কিছু করে ফেলতাম। আপনাদের মেসেজ পেয়ে ভরসা পেয়েছি। বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে কুড়িগ্রামের না‌গেশ্বরী থেকে লিখেছেন এক তরুণী।

তিনি পুলিশকে লিখেছিলেন, তার সাথে এক যুবকের বহুদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ছেলে কলেজ শিক্ষক। বিয়ের আশ্বাসে তারা অনেক গভীরভাবে মিশেছেন। যুবকের ইচ্ছায় তিনি গর্ভপাত করাতেও বাধ্য হয়েছেন। 

তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার সকলে জেনে গেছে। এই মুহুর্তে ছেলেটি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। কোনো মূল্যেই সে বিয়ে করবে না। ছেলের পরিবারও মেনে নিবে না। এলাকার গন্যমান্য অনেকের শরনাপন্ন হয়েছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় ছেলের পরিবার কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না।

বিয়ে করছি করবো বলেও পেরিয়েছে অনেক বছর। স্থানীয় সকল উপায়ের শরনাপন্ন হয়েও কোনো সমাধান বা বিচার পাননি তিনি। হতাশ হয়ে পড়েন। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। 

এই সময়েই এক পরিচিতজনের পরামর্শে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লিখেন তিনি। জানান, তিনি বাঁচতে চান। চান সম্মানের সাথে বাঁচতে। মিডিয়া উইং প্রাথমিকভাবে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। তাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে উৎসাহ দেয়। নানাভাবে তাকে কাউন্সিলিং করে।

পাশাপাশি, কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার ওসি মো. রওশন কবিরকে নির্দেশনা দেয় বিষয়টি ভালভাবে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে উপযুক্ত আইনী সহায়তা দিতে। সার্কেল এএসপি মো. সুমন রেজাকে পরামর্শ দেয় বিষয়টি তদারকি করতে।

নাগেশ্বরী থানার ওসি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সার্কেল এএসপি’র তত্ত্বাবধা‌নে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের পথ সুগম হয়। এলাকার চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে ও উপস্থিতিতে একটি উৎসব মুখর পরিবেশে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয় উক্ত তরুণী ও সেই কলেজ শিক্ষক।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং সতর্ক এবং সচেষ্ট ছিল যেনো উভয় পক্ষের মধ্যে সব ধরনের ভুল বুঝাবুঝি দূর করে একটি আত্ম-উপলদ্ধি ও সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় এসপি কুড়িগ্রাম সার্বিকভাবে পাশে ছিলেন।

সেই তরুণী পুলিশকে লিখেছেন, “মহান আল্লাহর দরবারে শতকোটি শুকরিয়া। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা এখন স্বামী-স্ত্রী। ভাবতেই খুশিতে পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি। স্যার, আল্লাহ আমার সাথে কোনো অন্যায় হতে দেননি। আর এতকিছু সব সম্ভব হয়েছে শুধু আপনাদের জন্য। আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নাই তবে আমি সারা জীবন আপনাদের জন্য দোয়া করবো। আল্লাহ আপনাদেরকে ফেরেশতা করে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। ---- আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একসাথে সুখে সংসার করতে পারি।”

শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআই‌জি (মি‌ডিয়া এন্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) মো. সোহেল রানা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানান।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস