মহিলা পুলিশের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও প্রচার, এসআই স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা


প্রকৌশল প্রতিনিধি:
মহিলা পুলিশের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও প্রচার, এসআই স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওধারণ ও এডিট করে প্রচারসহ নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীসহ পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী উপ-পরিদর্শক।

মামলার আসামিরা হলেন- বাদীর স্বামী এসআই ওবাইদুল কবির ও আরেক নারী এসআই পলি আক্তার।

বুধবার রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের হয়। মামলার বাদী ওই এসআই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) রাজশাহী মহানগর শাখায় কর্মরত। আদালতে বাদীর পক্ষে রাজশাহী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মোখলেসুর রহমান স্বপন মামলার নথিপত্র উপস্থাপন করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এসআই ওবাইদুল কবির মাদকাসক্ত ও পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত। ভুক্তভোগী এসআই তার বর্তমান স্ত্রী। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। স্বামীর নির্যাতনের কারণে ভুক্তভোগী এসআই ঢাকা থেকে রাজশাহীতে যোগদান করেন। রাজশাহীতে আসার পরে আসামি এসআই ওবাইদুল কবির ইউটিউব, ফেসবুক-মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগী এসআইয়ের ভুয়া অশ্লীল ছবি, ভিডিও ও কুরুচিপূর্ণ উক্তি প্রকাশ ও প্রচার করতে থাকে।

এছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামি ভুক্তভোগী ওই নারী এসআইয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টও হাতিয়ে নিয়েছে ও অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। এখান থেকেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভুক্তভোগী তার অ্যাকাউন্ট উদ্ধারেরও দাবি জানান।

ভুক্তভোগী ওই নারী এসআই বলেন, “আমার স্বামী এসআই ওবাইদুল কবির মাদকাসক্ত ও পরকীয়া করে। বিয়ের প্রথম থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। শারীরিক ও মানসিকভাবেও নির্যাতন করে। আমিও পুলিশে আছি তাই এ অন্যায় আমি মেনে নিইনি। এ বিষয়ে মামলা করেছি। যা চলমান আছে। রাজশাহী আসার পরে রাজপাড়া থানায় একটা সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলাম।”

তিনি জানান, তার স্বামী এসআই ওবাইদুল কবির তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের কিছু ভিডিওধারণ করে রেখেছিল। যেখানে সে নিজের চেহারা এডিট করে অন্য পুরুষের চেহারা দিয়ে ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছে। তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে পরিকল্পিতভাবে এই মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এ সময় তিনি আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।

এ বিষয়ে আসামি ওবাইদুল কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার অধীনস্ত রফিক নামের এক ব্যক্তি ফোন ধরে “স্যার ব্যস্ত আছে। কিছুক্ষণ পরে ফোন দেন।” বলে লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে তাকে ফোন দেওয়া হলে তিনি আর ফোন ধরেননি।

আইনজীবী মোখলেসুর রহমান স্বপন জানান, রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন। তিনি আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ওসি নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আদালত থেকে আমি এখনও কোনো নথিপত্র পাইনি। তাই মামলার বিষয়ে জানি না। নথিপত্র হাতে পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস